মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা দিয়েছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং মেক্সিকো থেকে আমদানি হওয়া পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে যাচ্ছে। আগামী ১ আগস্ট থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।
শনিবার (১২ জুলাই) নিজের মালিকানাধীন সামাজিক প্ল্যাটফর্ম `ট্রুথ সোশ্যাল`-এ প্রকাশিত এক চিঠিতে তিনি এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপি এই তথ্য জানিয়েছে।
ট্রাম্প তার ঘোষণায় বলেন, ইউরোপ ও মেক্সিকোসহ মোট ২৪টি দেশ এবং ইইউ’র ২৭টি সদস্যরাষ্ট্রের ওপর শুল্ক আরোপের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষার পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, যা বৈশ্বিক বাণিজ্যে নতুন করে উত্তেজনার জন্ম দিচ্ছে।
মেক্সিকোর প্রেসিডেন্টের উদ্দেশ্যে লেখা চিঠিতে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, সীমান্তে ফেন্টানাইল পাচার এবং অবৈধ অভিবাসন মোকাবেলায় দেশটি অপ্রতুল ব্যবস্থা নিয়েছে। তার ভাষায়, “মেক্সিকো কিছু উদ্যোগ নিলেও তা যথেষ্ট নয়। দেশটি এখন অপরাধী চক্রের জন্য নিরাপদ অঞ্চল হয়ে উঠছে।”
অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি লিখেছেন, “ইইউর সঙ্গে বছরের পর বছর ধরে চলে আসা বাণিজ্যিক ঘাটতি আমাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এতদিন আমরা একতরফা সম্পর্ক বজায় রেখেছি—যেখানে যুক্তরাষ্ট্র ছিল ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ। এখন সময় এসেছে ন্যায্যতা প্রতিষ্ঠার।”
এর আগে ২ এপ্রিল ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ বাণিজ্য অংশীদার দেশের পণ্যে উচ্চ শুল্কের ঘোষণা দিয়েছিলেন। তখন তা সাময়িকভাবে ৯০ দিনের জন্য স্থগিত রাখা হয়। পরে ৯ এপ্রিল ওই সময়সীমা বাড়িয়ে ১ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়। এবার স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হলো, শুল্ক কার্যকর হওয়ার সময় আর পেছানো হবে না।
৭ জুলাই বাংলাদেশ, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ ১৪টি দেশের ওপর নতুন শুল্ক আরোপের কথা জানান ট্রাম্প। এর মধ্যে মিয়ানমার ও লাওসের পণ্যে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করা হয়েছে। বাংলাদেশের ওপর নির্ধারিত হয়েছে ৩৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক। এরপর ৯ জুলাই আরও আটটি দেশের ওপর একই ধরনের শুল্ক ঘোষণা করা হয়, যার মধ্যে রয়েছে শ্রীলঙ্কা, ইরাক, ব্রাজিল ও ফিলিপাইন।
ট্রাম্পের ধারাবাহিক শুল্কনীতি বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের সিদ্ধান্ত বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থাকে হুমকিতে ফেলতে পারে এবং আন্তর্জাতিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা প্রশ্নের মুখে পড়বে।
একুশে সংবাদ/এন.ট/এ.জে