যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় বসছে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে দাবি করেছেন, তা প্রত্যাখ্যান করেছে ইরান। দেশটির উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তেহরানের কোনো বৈঠকের পরিকল্পনা নেই।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমরা এখনো মূল্যায়ন করছি, যুক্তরাষ্ট্র আলোচনায় বসতে চায় তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য, নাকি অন্য কোনো উদ্দেশ্যে।”
এর আগের দিন ন্যাটো সম্মেলন শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেন, ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যেসব আলোচনা যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে স্থগিত হয়েছিল, তা আবারও শুরু হতে যাচ্ছে। এমনকি তিনি চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনার কথাও উল্লেখ করেন।
এদিকে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের দাবি অনুযায়ী, ইরানের পারমাণবিক সক্ষমতা রুখতেই তেহরানে হামলা চালানো হয়েছে। তবে ইরান স্পষ্টভাবে বলেছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি একান্তই বেসামরিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে।
আরাঘচি আরও জানান, “ইসরায়েলি হামলায় আমাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে যে ক্ষতি হয়েছে তা নগণ্য নয়। এখন আমরা নতুন বাস্তবতায় কীভাবে এগোব—তা মূল্যায়ন করছি।”
গত ১৩ জুন ইরানে হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে দেশটির পারমাণবিক কেন্দ্র, সামরিক স্থাপনা ও আবাসিক এলাকাগুলো লক্ষ্যবস্তু হয়। প্রাণ হারান কয়েকজন উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তা, বিজ্ঞানী এবং সাধারণ মানুষ। পাল্টা জবাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে ইরান।
এই প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র শুরু থেকেই ইসরায়েলপক্ষীয় অবস্থান নেয়। এমনকি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা দেন, তিনি ইরানের ওপর সরাসরি হামলার সিদ্ধান্ত দুই সপ্তাহের মধ্যে জানাবেন। এরপর ২২ জুন মধ্যরাতে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের একটি লক্ষ্যবস্তুতে বিমান হামলা চালায়।
জবাবে ইরান কাতার ও ইরাকের মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠলে, ট্রাম্প যুদ্ধ থামাতে উদ্যোগ নেন। শেষ পর্যন্ত ২৪ জুন থেকে ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।
একুশে সংবাদ/ জা.নি/এ.জে