কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর ভয়াবহ হামলার পর নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে। এই পরিস্থিতিতে সরব হয়েছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। তিনি বলেছেন, “ভারত যদি হামলা চালায়, তাহলে তা সর্বাত্মক যুদ্ধে রূপ নেবে। তবে আলোচনা ছাড়া এই সংকটের সমাধান নেই।”
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্কাই নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে খাজা আসিফ এই হুঁশিয়ারি দেন। পাকিস্তানের শীর্ষ সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ শুক্রবার এ নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
খাজা আসিফ বলেন, “ভারত যা কিছু শুরু করবে, আমরা তার ভিত্তিতে প্রতিক্রিয়া জানাব। এটি একটি পরিমিত ও পরিমাপিত প্রতিক্রিয়া হবে। তবে যদি তা সর্বাত্মক আক্রমণে রূপ নেয়, তাহলে আমাদের প্রতিক্রিয়াও তেমনই হবে। আমরা প্রস্তুত আছি।”
তিনি বলেন, “আলোচনার মাধ্যমেই এই সংকটের সমাধান হওয়া উচিত। তবে ভারত যদি যুদ্ধ চায়, তাহলে পাকিস্তানও পিছিয়ে থাকবে না।”
দুই পারমাণবিক শক্তিধর দেশের মধ্যে উত্তেজনার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সতর্ক করে প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেন, “এই পরিস্থিতির একটি দুঃখজনক পরিণতি হতে পারে, যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।”
কাশ্মীরের পেহেলগামে ২৬ এপ্রিলের সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। এই হামলার দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার একটি শাখা ‘দ্য রেসিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (TRF)’।
জবাবে ভারত ৬০ বছরের পুরোনো সিন্ধু পানি চুক্তি একতরফাভাবে স্থগিত করেছে এবং অধিকৃত কাশ্মীরে নিরাপত্তা জোরদার করার পাশাপাশি পাকিস্তানবিরোধী পদক্ষেপ নিচ্ছে।
পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তান:
ওয়াঘা সীমান্ত দিয়ে সব ভারতীয় স্থল পরিবহন বন্ধ।
ভারতীয় বিমান চলাচলের জন্য আকাশসীমা বন্ধ।
ভারতীয় হাই কমিশনের কর্মী সংখ্যা ৩০-এ সীমিত।
পাকিস্তানের জাতীয় নিরাপত্তা কমিটি (NSC) স্পষ্ট জানিয়েছে, ভারতের যেকোনো পানি সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা যুদ্ধের পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।
উত্তেজনার মধ্যেই বৃহস্পতিবার রাতে জম্মু ও কাশ্মীরে নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে ছোটখাটো গোলাগুলির ঘটনা ঘটে, তবে এতে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।
এই উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর জানিয়েছে, তারা দক্ষিণ এশিয়ার ‘ভয়াবহ’ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
একুশে সংবাদ//ই.ট//এ.জে
আপনার মতামত লিখুন :