বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে ‘ভুল‘ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে প্রস্তাব পাস করায় নিন্দা জানিয়েছে খোদ ইউরোপীয় পার্লামেন্টেরই এক সেমিনারে। বুধবার (১১ অক্টোবর) বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইইউ পার্লামেন্টে বাংলাদেশ সম্পর্কিত এক সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
স্টাডি সার্কেল ইউকে আয়োজিত সেমিনারে ইউরোপীয় পার্লামেন্টকে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের বিষয়ে বিবৃতি দেয়ার আগে তথ্য যাচাই-বাছাই করে নেয়ার আহ্বান জানানো হয়।
`বাংলাদেশ সম্পর্কে অপপ্রচারের বদলে জেনে নিই সঠিক তথ্য` শীর্ষক সেমিনারে বক্তারা বলেন, ফ্যাক্ট চেক না করেই ভুল তথ্য দিয়ে অনেক গণমাধ্যম বাংলাদেশ নিয়ে সংবাদ প্রকাশ করে থাকে। যার ফলে নাশকতা সৃষ্টির শঙ্কা থাকে। শুধু তাই নয়, ইউরোপীয় পার্লামেন্টের অনেক সদস্যকে ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে নামকরা অনেক এনজিওকে বাংলাদেশ সম্পর্কে বিবৃতি দিতে উদ্বুব্ধ করা হয়।
ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য মাক্সিমিলিয়ান ক্রাহের আমন্ত্রণে পার্লামেন্টের একটি কক্ষে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে প্রধান বক্তা ছিলেন ব্রিটিশ রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ ক্রিস ব্ল্যাকবার্ন।
ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য ম্যাক্সিমিলিয়ান ক্রাহ বলেন, ‘আমি বাংলাদেশকে একটি সফল রাষ্ট্র হিসেবে দেখি। বাংলাদেশ অতীতের দরিদ্র অবস্থা থেকে বর্তমানে অনেক উন্নতি করেছে। দেশটিতে স্থিতিশীল গণতন্ত্র রয়েছে। নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন ও বিদায় নেয়। সামরিক বাহিনী তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করছে। সেখানে বিচার ব্যবস্থা রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমার মনে হয়, দেশটি এখন প্রত্যেক নাগরিকের জন্য খাবার, পানি, বিদ্যুতের মতো মৌলিক সামাজিক চাহিদাগুলো পূরণ করছে। আমার মতে, এগুলো মানবাধিকারেরই অংশ।’
সেমিনারে স্টাডি সার্কেলের সভাপতি সৈয়দ মোজাম্মেল আলীর সভাপতিত্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মানবাধিকার বিশেষজ্ঞ আইনজীবী ড. রায়হান রশীদ। মানবাধিকার ইস্যুতে বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকা অনেক ইতিবাচক। তবে এসব গণমাধ্যমে সঠিকভাবে উপস্থাপিত হচ্ছে না। উল্টো নানা ধরনের অপপ্রচার করা হলেও তার যথাযথ প্রতিবাদ করা হচ্ছে না বলে জানান তিনি।
মানবাধিকার আইনজীবি ড. রায়হান রশীদ আরও বলেন, ‘আমরা দেখছি যে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন, আন্তর্জাতিক ও জাতীয়, তারা মানবাধিকার নিয়েই কথা বলেন। তবে তারা যেটা নিয়েই কথা বলেন না কেন, সেটা আরেক ধরনের হিউম্যান রাইটস। সেটাও আসলে সার্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণার অংশ।’
বাংলাদেশ সম্পর্কে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট কোনো বিবৃতি দেয়ার আগে তথ্য যাচাই-বাছাই করার অনুরোধ জানান স্টাডি সার্কেলের সভাপতি সৈয়দ মোজাম্মেল আলী।
তিনি বলেন, ‘এই যে অপপ্রচার, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা এবং সত্যি ঘটনা মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের প্রত্যেকের দায়িত্ব এই কাজটা করা এবং তাদের নিজ নিজ কাউন্সিলর, এমপি ও ইউরোপীয় পার্লামেন্টের এমপি- সবাইকে এই বিষয়টি প্রচার করতে হবে।’
একুশে সংবাদ/এসআর



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

