দেশের তৈরি পোশাক শিল্প ও বস্ত্র রপ্তানি খাত অনিশ্চয়তার কবলে। আর এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে ব্যবসায়ীরা বলেছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা, ক্রেতাদের আস্থার সংকট এবং বিভ্রান্তিকর সরকারি বার্তা সব মিলিয়ে বড় ক্রেতারা কার্যাদেশ দেয়া থেকে সরে যাচ্ছে। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার মধ্যে ক্রেতারা কার্যাদেশ দেবে না। এ সমস্যা মোকাবিলায় বিজিএমইএ সভাপতিকে মন্ত্রী পদমর্যাদা দেয়ার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর উত্তরা ক্লাবে মতবিনিময় সভায় পোশাক খাতে বিদ্যমান নানা সংকট ও এর মোকাবিলায় বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি কাজী মনিরুজজামানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বলেন, সরকার আমাদেরকে এলডিসি গ্রাজুয়েশন চাপিয়ে দিতে চাচ্ছে। এখন আমরা প্রস্তুত না। আগামী নিবাচনে উচ্চকংক্ষে ১০ জন শিল্প মালিককে রাখারও দাবি করেন ব্যবসায়ীরা।
বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, আমাদের পাশের দেশ ভারত তার শিল্প মালিকদের অনেক সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে যা আমার শিল্পের জন্য ভয়াবহ অবস্থা হবে। দেশের সরকার আমাদের ব্যাংকগুলোকে টিকে রাখার জন্য হাজার কোটি টাকা দিয়েছে সেই টাকা কই গেল, ব্যাংক তো আমাদের টাকা দিচ্ছে না।
বিজিবিএ সভাপতি মোহাম্মদ পাভেল বলেন, পোশাক খাতের সঙ্কটের শেষ নেই, নিরাপত্তা, পলিসি সংকট। এই সংকট সমাধান এর জন্য সবাই মিলে রোড মাপ করতে হবে। আমলারা রোড মাপ করলে হবে না। সংকট সমাধান এর জন্য আগামী নিবাচেন সরকারে পোশাক খাতের প্রতিনিধিত্ব দরকার। তিনি আরও বলেন আমদানিকারকরা অর্ডার দেয়া নিয়ে কোন নিরাপত্তা পাচ্ছে না।
বিজিএমইএ’র সহসভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, চট্টগ্রাম পোর্টের দুরাবস্থা এবং এয়ারপোর্টের আগুন নিয়ে পোশাক খাতের সবাই ক্ষতিগ্রস্ত।
বিকেএমইএ পরিচালক খেলায়েত হোসেন সরকারের কাছে নীতিগত সহায়তা দাবি করেন। মতবিনিময়ের সঞ্চালক ও স্পারো গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শোভন ইসলাম বলেন, ‘গত চার মাস ধরে অর্ডার কমছে। অথচ সরকারের কোনো নীতিগত সহায়তা পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি উল্লেখ করেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি কোভিড সময়ের চেয়েও খারাপ। অনেক কারখানা ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়ে ক্লাসিফায়েড হয়ে যাচ্ছে।’
ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের সুযোগ সংক্রান্ত সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে শোভন ইসলাম বলেন, ‘এটি বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের জন্য আরো বড় ধরনের বিপর্যয় বয়ে আনবে। শোভন ইসলাম ব্যবসায়ীদের সামনে দাবি করেন, আগামীতে বিজিএমইএ সভাপতিকে মন্ত্রী পদমর্যাদা দিতে হবে।’
বিজিএপিএমই সভাপতি আল শাহরিয়ার আহমেদ বলেন, এয়ারপোর্টে আগুনে অনেক লোকসান হয়েছে। আগামী নিবাচনে তৈরি পোশাক খাতের সংসদ সদস্য দরকার বলে জানান তিনি।
চট্টগ্রাম বন্দরের সেবার বিপরীতে মাশুল বৃদ্ধি দেশের রপ্তানিমুখী শিল্প খাতে নতুন চাপ সৃষ্টি করবে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা কমিয়ে দেবে বলে আশঙ্কা করছেন বক্তারা।
আর্থিক খাতে নাজুক পরিস্থিতি এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যে আস্থার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে বিনিয়োগবান্ধব নীতি ও প্রশাসনিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন বক্তারা। বিজিএমইএ সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, বতমান সরকারকে আগামীতে একটা সুন্দর নিবাচন এর আয়োজন করতে হবে। নিবাচিত সরকার হলে আমদানিকারকরা অর্ডার বাড়াবে।
বিজিএমইএ সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম, বিজিএমইএ মেম্বার, কফিল উদ্দিন, চৈতী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কালাম ও উত্তরা ক্লাব সভাপতি ফয়সাল তাহের উপস্থিত ছিলেন।
একুশে সংবাদ/ এনআই



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

