জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংগঠন “এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ” দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতাদের অনুরোধ ও জাতীয় স্বার্থ বিবেচনায় ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছে। সংগঠনের সভাপতি হাছান মুহম্মদ তারেক রিকাবদার রোববার (২৯ জুন) এক বিবৃতিতে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
তিনি বলেন, চলমান শাটডাউন কর্মসূচি দেশের আমদানি-রপ্তানি ও সরবরাহ চেইনে অচলাবস্থা তৈরি করেছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ব্যবসায়ী নেতারা উদ্যোগী হয়ে আলোচনা করেছেন। অর্থ উপদেষ্টার আশ্বাস ও সরকারের গঠিত পাঁচ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটির প্রতি আস্থা রেখে আমরা আন্দোলন স্থগিত করছি। তবে একটি টেকসই ও কার্যকর রাজস্ব ব্যবস্থার লক্ষ্যে সংস্কার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
এর আগে শাটডাউন কর্মসূচি পালনের অংশ হিসেবে রোববার এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন আন্দোলনকারীরা। এনবিআরের প্রতিটি প্রবেশদ্বারে ছিল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা। `মার্চ টু এনবিআর` কর্মসূচিও পালন করা হয়।
এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের দাবি, অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে পূর্বনির্ধারিত বৈঠক বাতিল হলেও ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে হওয়া বৈঠকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গীকার এসেছে। বিশেষ করে সরকার গঠিত পাঁচ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটির মাধ্যমে রাজস্ব খাতে টেকসই সংস্কারের পথ তৈরি হতে পারে বলে তারা আশাবাদী।
এদিকে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সচিবালয়ে ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের জানান, এনবিআর পরিস্থিতি নিয়ে পাঁচ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি রাজস্ব ব্যবস্থার সংস্কার ও সমাধানে বিভিন্ন পক্ষের মতামত নেবে। যদিও কমিটির সদস্যদের নাম প্রকাশ করেননি তিনি।
এর আগে চলতি বছরের ১২ মে সরকার এক অধ্যাদেশের মাধ্যমে এনবিআর ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা নামে দুটি নতুন বিভাগ গঠন করে। এর প্রতিবাদে এনবিআরের অধীনস্ত কাস্টমস, ভ্যাট ও আয়কর বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অবস্থান ধর্মঘট, কলম বিরতি এবং শেষে কমপ্লিট শাটডাউনসহ একাধিক কর্মসূচি পালন করেন।
পরিস্থিতি শান্ত করতে অর্থ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে বৈঠক হলেও এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের নেতারা তাতে অংশ নেননি। এরপর চলমান অচলাবস্থা নিরসনে সরকার এনবিআরের সব শ্রেণির চাকরিকে ‘অত্যাবশ্যকীয় সেবা’ হিসেবে ঘোষণা করে।
পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের শাটডাউন প্রত্যাহারের ঘোষণার ফলে সাময়িক স্বস্তি ফিরলেও দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য টেকসই ও অংশগ্রহণমূলক সংস্কার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা জরুরি।
একুশে সংবাদ/ঢ.প/এ.জে
একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
