জয়পুরহাটের কালাইয়ে সরকারি হাটের জায়গা দখল করে দোকানঘর নির্মাণের পর সেই ঘর সাড়ে ৪ লাখ টাকায় বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। সরকারি জায়গা অবৈধভাবে দখল ছাড়তে প্রশাসন নির্দেশ দিলেও তা মানা হয়নি। বরং দখল নেওয়ার প্রায় আড়াই বছর পর নির্মিত ঘরটি উচ্চমূল্যে বিক্রি করা হয়েছে। এমন ঘটনা ঘটেছে কালাই উপজেলার বৃহৎ পুনট হাটে।
অবৈধ দখল করে পজিশন বিক্রি করেছেন বিদ্যুৎ হোসেন নামে এক ব্যক্তি। তিনি পুনট ইউনিয়নের ভূগোইল গ্রামের বাসিন্দা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বিদ্যুৎ হোসেন তখন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আর এই পজিশনটি ক্রয় করেছেন রুবেল হোসেন, যিনি বর্তমানে পুনট হাটের সরকারি জায়গা দখল করে ভূষিমালের ব্যবসা করছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আড়াই বছর আগে বিদ্যুৎ হোসেন ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুনট হাটের সরকারি জায়গা দখল করেন। এরপর সেখানে সিমেন্টের খুঁটি, কাঠ–বাঁশ ও টিনের ছাউনি দিয়ে বড় আকারে একটি ঘর নির্মাণ করেন। প্রথমদিকে তিনি ঘরটি ভাড়ায় পরিচালনা করলেও সম্প্রতি হাটের আরেক ব্যবসায়ী রুবেল হোসেনের কাছে পজিশনসহ সাড়ে ৪ লাখ টাকায় বিক্রি করেন।
সরকারি জায়গা দখলের সময় বাধা দিতে গেলে বিদ্যুৎ হোসেন, তার ভাই ও ভাতিজার হাতে লাঞ্ছিত হয়েছেন অনেকে। এরপর স্থানীয়রা বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অনুযায়ী উপজেলা সহকারী ভূমি কার্যালয় থেকে দখল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও তা মানা হয়নি। বরং দীর্ঘদিন দখলে রাখার পর ঘরটি বিক্রি করা হয়েছে।
কালাই সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পুনট হাটে সরকারি জায়গায় অবৈধ দখল নিয়ে একাধিক ব্যক্তি লিখিত অভিযোগ করেন। সরেজমিন তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদের নির্দেশ দেওয়া হয়।
শাহীনুর রহমান নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, “কয়েকদিন আগে বিদ্যুৎ ওই ঘরটি সাড়ে ৪ লাখ টাকায় রুবেলের কাছে বিক্রি করেছে—এটা হাটের সবাই জানে। শুধু বিদ্যুৎ নয়, আরও অনেকে হাটের জায়গা দখল করে ইট দিয়ে ঘর নির্মাণ করছে। ইউনিয়ন ভূমি অফিসের লোকজন আসলেও দেখেও না দেখার ভান করে চলে যায়। কেউ কাজ বন্ধ করেনি; বরং এখন দখলের প্রতিযোগিতা চলছে।”
অভিযুক্ত বিদ্যুৎ হোসেন বলেন, “ঘর নির্মাণে আমার প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। আমি পজিশনসহ ঘরটি সাড়ে ৪ লাখ টাকায় বিক্রি করেছি—এটা সত্য। তবে সরকারি জায়গা বিক্রির অভিযোগ মিথ্যা।”
ঘর ক্রয়ের বিষয়টি স্বীকার করে রুবেল হোসেন বলেন, “যা শুনেছেন ঠিকই শুনেছেন। ব্যবসা করার জন্য আমি ঘরটি বিদ্যুতের কাছ থেকে কিনেছি।”
হাট ইজারা কমিটির সভাপতি ও কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামিমা আক্তার জাহান বলেন, “বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
একুশে সংবাদ//এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

