চারটি উন্নয়ন প্রকল্পে বাংলাদেশকে ১৩০ কোটি ডলার সহায়তা দেবে এডিবি

ব্যাংক খাত সংস্কার, বিদ্যুৎ পরিবহন ও সড়ক অবকাঠামো উন্নয়নে চারটি প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশকে ১.৩ বিলিয়ন (১৩০ কোটি) ডলার ঋণ সহায়তা দেবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এ লক্ষ্যে শুক্রবার (২০ জুন) অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) এবং এডিবির মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।

ব্যাংক খাত সংস্কারে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের সহায়তা

বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতকে আরও স্থিতিশীল ও টেকসই করতে এডিবি ৫০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দিচ্ছে। ‘ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতা ও সংস্কার কর্মসূচি (উপ-প্রোগ্রাম ১)’-এর আওতায় এ অর্থ ব্যবহৃত হবে। মূলত, ব্যাংকিং নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার উন্নয়ন, সম্পদের গুণগত মান নিশ্চিতকরণ, করপোরেট সুশাসন ও তারল্য ব্যবস্থাপনার কাঠামো শক্তিশালী করাই এই উদ্যোগের লক্ষ্য।

চুক্তিতে ইআরডির পক্ষে স্বাক্ষর করেন সচিব মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং এডিবির পক্ষে কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিওং।

এ সময় এডিবি প্রতিনিধি বলেন, “এই সহায়তা বাংলাদেশ ব্যাংকের সক্ষমতা বৃদ্ধি, ব্যাংকগুলোর মধ্যে সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে সহায়ক হবে। একইসঙ্গে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য অর্থপ্রবাহ সহজতর করা যাবে।”

ঢাকা-উত্তর-পশ্চিম সড়ক করিডোর প্রকল্পে ২০৪ মিলিয়ন ডলার

এসএএসইসি ঢাকা-উত্তর-পশ্চিম আন্তর্জাতিক সড়ক করিডোর প্রকল্পের আওতায় আরও ২০৪ মিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দিচ্ছে এডিবি। এ প্রকল্পের মাধ্যমে এলেঙ্গা থেকে হাটিকুমরুল হয়ে রংপুর পর্যন্ত প্রায় ১৯০ কিলোমিটার সড়ক চার লেনে উন্নীত করা হবে। এতে দেশের উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর সড়ক যোগাযোগ আরও গতিশীল হবে এবং আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে।

এই অংশটি হচ্ছে বহুপর্যায়ের ১.২ বিলিয়ন ডলার এডিবি ঋণ সহায়তার চতুর্থ কিস্তি।

হোয়ে ইউন জিওং জানান, “উন্নত সড়ক অবকাঠামোর মাধ্যমে শুধু পণ্য ও যাত্রী পরিবহন সহজ হবে না, বরং এটি নেপাল, ভুটান ও ভারতের সঙ্গে উপ-আঞ্চলিক সংযোগকেও গতিশীল করবে।”

প্রকল্পের উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য

> নির্মাণকাজে লিঙ্গ-সংবেদনশীল নকশা ও পথচারীবান্ধব ব্যবস্থা যুক্ত থাকবে

> নির্মিত হবে ফুটওভারব্রিজ ও ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেন

> জলবায়ু সহনশীল নির্মাণ প্রযুক্তি প্রয়োগ করা হবে

> সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের রোড ম্যানেজমেন্ট ব্যবস্থা শক্তিশালী করা হবে

এই করিডোরের উন্নয়নে ১৯৯৪ সালে যমুনা সেতু প্রকল্পের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে সহায়তা দিয়ে আসছে এডিবি।

বাংলাদেশে যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের জন্য সড়কই প্রধান মাধ্যম। বর্তমানে ৭০ শতাংশ যাত্রী এবং ৬০ শতাংশ মালামাল সড়কপথে পরিবহন হয়। যানবাহনের সংখ্যা বছরে গড়ে ৮ শতাংশ হারে বাড়ছে। এ প্রেক্ষাপটে এই ধরনের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও আঞ্চলিক সংযোগকে বেগবান করতে বড় ভূমিকা রাখবে।

একুশে সংবাদ/ আ.ট/এ.জে