কালো টাকা বৈধ করার সুযোগকে সৎ করদাতাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ বলে অভিহিত করেছে দেশের অন্যতম বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেছেন, “জুলাই আন্দোলনের মূল চেতনা ছিল বৈষম্যহীন সমাজ গঠন। অথচ বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রেখে সেই চেতনাকেই অপমান করা হয়েছে।”
মঙ্গলবার (৩ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট পরবর্তী প্রতিক্রিয়া সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, “বাড়ি বা ফ্ল্যাট কিনতে কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ বহাল রাখা হয়েছে, যা নিয়মিত করদাতাদের নৈতিকতা ও আইন মেনে চলার চেতনার ওপর আঘাত। এটি একটি স্পষ্ট বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত।”
তিনি আরও বলেন, “এই নীতির মাধ্যমে রাজস্ব বাড়বে, এমন ধারণা বাস্তবসম্মত নয়। বরং এতে কর নেট বাড়ার সম্ভাবনার বদলে কর ফাঁকির সংস্কৃতি উৎসাহিত হবে।”
প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৮.৯ শতাংশ বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে। এ বিষয়ে সিপিডি বলেছে, এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে বড় চ্যালেঞ্জ। একইসঙ্গে আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৬.৫ শতাংশে নামিয়ে আনার ঘোষণাও বাস্তবতা বিবর্জিত বলে উল্লেখ করে প্রতিষ্ঠানটি।
এলএনজিতে ভ্যাট অব্যাহতি, ব্যাংকে ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত আবগারি শুল্ক প্রত্যাহার, কৃষি খাতে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত রাখা এবং পরিশোধিত চিনিতে আমদানি কর হ্রাসের মতো কিছু প্রস্তাবকে ইতিবাচক হিসেবে দেখেছে সিপিডি।
তারা বলেছে, এসব পদক্ষেপ সাধারণ ভোক্তা ও ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারীদের স্বস্তি দেবে। তামাকপণ্যে ২.৫ শতাংশ সারচার্জ আরোপকে সঠিক পদক্ষেপ হিসেবে স্বাগত জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
জুলাই অভ্যুত্থানের যোদ্ধাদের জন্য করমুক্ত আয়সীমা ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণের প্রস্তাবকে সময়োপযোগী ও সম্মানজনক বলে অভিহিত করেছে সিপিডি।
তবে সার্বিকভাবে বাজেটকে ‘নীতিগতভাবে অসংলগ্ন’ বলে মন্তব্য করে সিপিডি বলেছে, রাজস্ব, মূল্যস্ফীতি ও আয় বৈষম্য হ্রাসে একটি সুসংহত ও সাহসী বাজেট প্রস্তাব এই মুহূর্তে প্রয়োজন ছিল। কিন্তু বাস্তবে সরকার পুরনো বৈষম্যমূলক ধারা বজায় রেখেছে।
একুশে সংবাদ / স.ট/এ.জে