দেশের ছয়টি দুর্বল বেসরকারি ব্যাংক একীভূত হয়ে সরাসরি সরকারের নিয়ন্ত্রণে আসছে। ব্যাংকিং খাতের এই গুরুত্বপূর্ণ রদবদলের প্রক্রিয়া শেষ হবে আগামী জুলাইয়ের মধ্যেই। এমনটাই জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর।
ব্যাংকগুলো হলো:
১. সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড (এসআইবিএল)
২. ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক
৩. গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক
৪. ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি
৫. এক্সিম ব্যাংক
৬. ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড
গভর্নরের ভাষ্যমতে, “গত দেড় দশকে সীমাহীন অনিয়ম, লুটপাট আর দুর্নীতিতে এসব ব্যাংক প্রায় পঙ্গু হয়ে পড়েছে। বর্তমানে এই ব্যাংকগুলোর আর্থিক ভিত্তি এতটাই দুর্বল যে, বাজারে তাদের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আস্থা একেবারে নেই বললেই চলে।”
বাংলাদেশ ব্যাংক ইতোমধ্যে ব্যাংকগুলোর আর্থিক প্রতিবেদন, খেলাপি ঋণ ও সম্পদের অবস্থান পর্যালোচনা করেছে। জুলাইয়ের মধ্যে সরকারি মালিকানা নিশ্চিত করে এগুলোতে মূলধন সংস্থান করা হবে। তারপর ভিত্তি শক্ত হলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য পথ উন্মুক্ত করা হবে।
গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন,“সরকারের নিয়ন্ত্রণে আনার মাধ্যমে ব্যাংকগুলোতে শৃঙ্খলা ফেরানো, গ্রাহকের আস্থা ফিরিয়ে আনা এবং ব্যাংক খাতের স্থিতিশীলতা রক্ষা করাই আমাদের লক্ষ্য। একীভূত ব্যাংকগুলোর পরিচালনা হবে একটি অভিন্ন বোর্ডের মাধ্যমে।”
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের এই পদক্ষেপ দেরিতে হলেও প্রয়োজনীয়। তবে সরকারি নিয়ন্ত্রণ আসলেই কতটা কার্যকর হয়—তা নির্ভর করবে ব্যবস্থাপনার ওপর। তারা দাবি করছেন, এর মাধ্যমে দুর্নীতিবাজ পরিচালনা পর্ষদ ও ঋণখেলাপিদের দায়মুক্তির সুযোগ যেন না থাকে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, সাধারণ আমানতকারীদের অর্থ নিরাপদ রয়েছে এবং আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত নির্দেশিকা শিগগিরই জারি করা হবে।
এই পদক্ষেপ দেশের ব্যাংক খাতে বড় ধরনের নীতিগত পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে। সরকারের প্রত্যক্ষ হস্তক্ষেপ ব্যাংকগুলোর জন্য হয়তো শেষ সুযোগ, তবে এ পদক্ষেপ ব্যর্থ হলে তার দায়ও থাকবে নীতিনির্ধারকদের কাঁধে।
একুশে সংবাদ/চ.ট/এ.জে