দেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বড় ধরনের সাইবার হামলার আশঙ্কা রয়েছে বলে সতর্কতা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংক মনে করছে, ডিজিটাল লেনদেন ও আর্থিক খাতে প্রযুক্তিনির্ভরতা বাড়ায় এখন অতীতের চেয়ে ঝুঁকি বেশি।
বুধবার (৩০ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ থেকে পাঠানো এক চিঠিতে এই সতর্কতা জানানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পেমেন্ট সেবাদাতা, স্বাস্থ্য খাতসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য অবকাঠামো (সিআইআই) সাইবার হামলার ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এসব খাতে সম্ভাব্য আঘাত ঠেকাতে তাৎক্ষণিক প্রস্তুতির আহ্বান জানানো হয়েছে।
চিঠিতে দেশের সব তফসিলি ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও পেমেন্ট সেবা প্রদানকারীদের জন্য ১৪টি নির্দেশনা দেওয়া হয়।
এর মধ্যে রয়েছে: সার্ভার, অপারেটিং সিস্টেম ও ডেটাবেইস নিয়মিত হালনাগাদ রাখা, অপ্রয়োজনীয় নেটওয়ার্ক পোর্ট বন্ধ রাখা, কেবল অনুমতিপ্রাপ্ত ব্যবহারকারীর অ্যাক্সেস নিশ্চিত করা, নিয়মিত ব্যাকআপ রাখা এবং ৩-২-১ ব্যাকআপ নিয়ম অনুসরণ করা, ডেটা এনক্রিপশন বাধ্যতামূলক করা, মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন (MFA) চালু রাখা ।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে আরও বলা হয়, আধুনিক নজরদারি প্রযুক্তি ও সফটওয়্যার ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে, যেমন: এন্ডপয়েন্ট ডিটেকশন অ্যান্ড রেসপন্স (EDR), হালনাগাদ অ্যান্টিভাইরাস ইত্যাদি।
তবে শুধু প্রতিরোধ নয়—সাইবার হামলার পর দ্রুত প্রতিক্রিয়া নিশ্চিত করাও জরুরি। এজন্য ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম গঠন ও প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে। সন্দেহজনক লগইন, ফাইল পরিবর্তন কিংবা বাহ্যিক সংযোগ পাওয়া গেলে তা যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানোর নির্দেশও রয়েছে।
রিমোট এক্সেস, ভিপিএন এবং প্রিভিলেজড অ্যাকাউন্ট ব্যবস্থাপনায় বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন এবং নিরবচ্ছিন্ন মনিটরিং সেন্টার চালু রাখার ওপর জোর দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সার্বিক নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে লোড ব্যালান্সার স্থাপন, বিকল্প ব্যবস্থা প্রস্তুত রাখা এবং বিজনেস কনটিনিউটি ও ডিজাস্টার রিকভারি পরিকল্পনা হালনাগাদ করে কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের আহ্বান জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, এসব ব্যবস্থা দ্রুত গ্রহণ না করলে দেশের আর্থিক খাত বড় ধরনের বিঘ্নের মুখে পড়তে পারে। তাই সময়ক্ষেপণ না করে এখনই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি।
একুশে সংবাদ/এ.জে