রাজশাহীর তানোরে নলকূপের জন্য খনন করা একটি উন্মুক্ত গর্তে পড়ে যাওয়া শিশু সাজিদ আর বেঁচে নেই। বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৪০ মিনিটে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন ।
চিকিৎসকরা জানান, সাজিদকে রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে হাসপাতালে আনা হলেও তার আগেই শিশুটি প্রাণ হারায়।
এর অল্প কিছু আগে, রাত ৯টার দিকে, ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীরা প্রায় ৪০ ফুট নিচে থাকা গর্ত থেকে শিশুটিকে তুলে আনেন বলে জানান ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্স-এর পরিচালক (অপারেশন) লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী।
ঘটনাটি ঘটে বুধবার দুপুরে পাঁচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট গ্রামে। সাজিদ তার মা ও ভাইয়ের সঙ্গে বাড়ির পাশের জমির ওপর দিয়ে হাঁটছিল। জমিটি খড় দিয়ে ঢাকা ছিল এবং নিচে যে বিপজ্জনক গর্ত রয়েছে তা কেউ জানতেন না। হঠাৎ সাজিদ নিচে পড়ে গেলে তার আর্তচিৎকারে মা বুঝতে পারেন সন্তান গর্তে পড়ে গেছে। খড় সরাতেই উন্মোচিত হয় আহত নলকূপের গভীর মুখ।
স্থানীয়দের অভিযোগ, গত বছর একজন ব্যক্তি এখানে গভীর নলকূপ বসানোর উদ্যোগ নিলেও ১২০ ফুট পর্যন্ত খুঁড়েও পানি না পাওয়ায় কাজটি পরিত্যক্ত করা হয়। এরপর গর্তটি মুখ খোলা অবস্থায় পড়ে থাকে, কোনো নিরাপত্তা বেষ্টনীও ছিল না। বর্ষার পানিতে গর্তটি আরও বিস্তৃত হয়ে বিপজ্জনক রূপ নেয়।
ঘটনাস্থলে হাজারো মানুষ ভিড় করেন। গর্তের পাশে সারারাত অপেক্ষা করেন অসহায় মা— কোনোভাবে সন্তানকে ফিরে পাওয়ার আশায় কান্না, প্রার্থনা আর আকুতি চলতে থাকে। শুরুতে নিচ থেকে শিশুটির আওয়াজ পেলেও সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শব্দ মিলিয়ে যায়, যা উদ্ধার–দলের উদ্বেগ বাড়ায়।
ফায়ার সার্ভিস গর্তের ভিতরে অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করে উদ্ধার চেষ্টা চালিয়ে যায়। মেডিকেল টিম ও প্রশাসন শুরু থেকেই ঘটনাস্থলে ছিল।
সন্ধ্যায় লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছিলেন, শিশুটি জীবিত থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। তবুও জীবিত বা মৃত—যে অবস্থাতেই হোক, তাকে উদ্ধারে অভিযান চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তিনি।
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

