শীতের আমেজকে ঘিরে কবি নজরুল সরকারি কলেজে ব্যাডমিন্টন, ভলিবল ও ক্যারাম বোর্ডসহ নানা খেলাধুলায় মেতে উঠেছে শিক্ষার্থীরা। কলেজের পরিবেশ পুরোপুরি উৎসবমুখর, এবং রাতভর চলছে এসব খেলাধুলা। প্রকৃতিতে শীতের আগমনে স্কুল-কলেজে শীতকালীন ছুটি শুরু হয়েছে। দেশের প্রায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখন বন্ধ। ছুটি পেয়েই অনেক শিক্ষার্থী নিজ নিজ এলাকায় ছুটে গেছেন। তবে পরীক্ষার কারণে যারা বাড়ি যেতে পারেননি, তারা সন্ধ্যার পর ক্যাম্পাসে এসে বিভিন্ন খেলাধুলায় অংশ নিচ্ছেন।
কলেজ মাঠের বিভিন্ন স্থানে ব্যাডমিন্টন ও ভলিবল খেলার কোর্ট তৈরি করা হয়েছে। এছাড়াও মুক্ত মঞ্চে আয়োজন করা হয়েছে ক্যারাম বোর্ড খেলা। একাধিক ব্যাডমিন্টন কোর্ট এবং ক্যারাম বোর্ড শিক্ষার্থীদের জন্য সাজানো হয়েছে, যাতে একই সময়ে অনেক শিক্ষার্থী খেলায় অংশ নিতে পারে। বিকেল থেকে শুরু করে রাতভর চলে প্রাণবন্ত এই খেলাধুলা।
শীতের শিশির ভেজা হাওয়ায় গ্রাম থেকে শহরের অলিগলিতে বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলার আয়োজন করা হয়। ব্যাডমিন্টন ও ভলিবল সেই খেলাধুলার অন্যতম। নভেম্বর থেকে জানুয়ারি মাসে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এই খেলাধুলার আয়োজন হয়।
শীতের রিক্ততা অবসরমনে চাঙ্গা করে তোলে। শিরশিরে হাওয়ায় ব্যাডমিন্টন ও ভলিবল কোর্ট যেন প্রাণ ফিরে পায়। সেই শীতের আমেজকে বরণ করে নিতে পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলায় মেতে উঠেছেন কবি নজরুল কলেজের শিক্ষার্থীরা। মাঠে উচ্চস্বরে ভেসে আসে — “আউট”, “ব্যাট”, “চার্জ”, “পয়েন্ট” এসব শব্দে পুরো ক্যাম্পাসই উচ্ছ্বাসে মুখরিত।

ভলিবল এবং ব্যাডমিন্টন যেন জানাচ্ছে, শীত এসেছে লাল ইটের ক্যাম্পাসে। সন্ধ্যায় বিভিন্ন খেলাধুলার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা আড্ডা জমাচ্ছে। ক্লাস ও পরীক্ষার পর বিকালে মাঠে এসে কেউ খেলছে, কেউ বা পাশেই বসে বন্ধুদের খেলা উপভোগ করছে।
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সোহাগ বলেন, “শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বিকাশের জন্য খেলাধুলা অপরিহার্য। ক্যাম্পাসে খেলাধুলার আয়োজন শিক্ষার্থীদের মধ্যে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। আমার মতে সিনিয়র ও জুনিয়রদের মধ্যে ভালো সম্পর্ক গড়ে তোলার সেরা প্ল্যাটফর্ম হলো খেলাধুলা। সারাদিনের ব্যস্ততার শেষে খেলতে আসার সময় একদিকে আনন্দ, অন্যদিকে মানসিক প্রশান্তি পাই।”
ইতিহাস বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বাপ্পি রায় বলেন, “সময়ের আবর্তে প্রতি বছর শীত আসে, আর সেই শীতের আমেজকে ঘিরে আমরা বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলায় মেতে উঠি। সারাদিনের ব্যস্ততার পরে বন্ধুদের সঙ্গে খেলতে এসে সব অবসাদ যেন দূর হয়ে যায়। খেলাধুলার ফলে কলেজের মাঠে শিক্ষার্থীদের পদচারণায় চারিদিক উৎসবমুখর হয়ে ওঠে। এতে আমাদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধও বৃদ্ধি পায়।”
ইংরেজি বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাকিব বলেন, “আমরা সদ্য প্রথম বর্ষের পরীক্ষা শেষ করেছি। আমাদের এই প্রজন্মের অধিকাংশ ছেলে-মেয়ে ভার্চুয়াল জগতে আসক্ত। আমি মনে করি ক্যাম্পাসে খেলাধুলার মাধ্যমে এই ভার্চুয়াল জগত থেকে বের হওয়া সম্ভব। খেলাধুলা আমাদের মানসিক বিকাশকে ত্বরান্বিত করে এবং সামাজিক দক্ষতাও বৃদ্ধি করে। তাই শীতের আগমনে পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলায় মেতে উঠতে চাই, যাতে আমাদের শরীর ও মন দুটোই সুস্থ থাকে।”
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

