AB Bank
  • ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আব্দুল মোমেন খানের ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী শুক্রবার


Ekushey Sangbad
সাব্বির হোসেন, পলাশ, নরসিংদী
১০:০৩ পিএম, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৫

সাবেক খাদ্যমন্ত্রী আব্দুল মোমেন খানের ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী শুক্রবার

১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভার সফল খাদ্যমন্ত্রী, সাবেক এমপি ও কেবিনেট সচিব এবং আধুনিক নরসিংদীর রূপকার আব্দুল মোমেন খানের ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী। 

এ উপলক্ষে নরসিংদীর পলাশে শুক্রবার নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে পলাশ উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে সকালে মরহুমের সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন এবং দুপুরে পলাশ উপজেলা আধুনিক মাল্টিপারপাস অডিটোরিয়ামে স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।

জানা যায়, ১৯১৯ সালে তৎকালীন ঢাকা জেলার কালীগঞ্জ থানাধীন চরনগরদী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন, যা বর্তমানে নরসিংদী জেলার পলাশ থানার অন্তর্ভুক্ত। সত্তর ও আশির দশকে নরসিংদী মহকুমা ও পলাশ থানা প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তার অবদান ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এলাকাবাসীর কাছে তিনি আধুনিক নরসিংদীর রূপকার হিসেবে পরিচিত।

ছোটবেলা থেকেই তিনি মেধার পরিচয় দিয়ে আসছিলেন। প্রাথমিক পর্যায়ে স্কুল জীবনে ২য় শ্রেণী এবং পরে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে মেধা বৃত্তি লাভ করেন। তাঁর বাবা আব্দুল বারী খান ছিলেন স্থানীয় মাইনর বিদ্যালয়ের শিক্ষক। আব্দুল মোমেন খান ছিলেন মহাত্মা গান্ধীর একনিষ্ঠ অনুসারী এবং ইংরেজদের বিরুদ্ধে “ভারত ছাড়” আন্দোলনে নিজ গ্রামের বর্ধিষ্ণ চরনগরদী বৃটিশ পণ্যের বর্জন উৎসবে নেতৃত্ব দেওয়ার ফলে চাকরিচ্যুত হয়ে কারাবরণ করেন।

উন্নত শিক্ষার জন্য তার পুত্রকে শীতলক্ষ্যা নদীর পশ্চিম তীরে কালীগঞ্জ রাজা কালী নারায়ণ উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রেরণ করেন। সেই সময়ের এই বিদ্যালয়টি গাজীপুর ও নরসিংদী এলাকার মধ্যে খ্যাতির শীর্ষে ছিল। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিরেন সেন তাকে বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে ক্লাস নেওয়ার সুযোগ প্রদান করতেন।

সফলভাবে প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার পর আব্দুল মোমেন খান ঢাকায় আসেন এবং ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অবিভুক্ত বাংলায় পঞ্চম স্থান এবং মুসলিমদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন। এরপর তিনি অর্থনীতিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে তৎকালীন উপাচার্য আর.সি. মজুমদার প্রদত্ত প্রশংসাপত্র লাভ করেন। সফলভাবে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বেঙ্গল সার্ভিসে যোগ দেন।

১৯৪২ সালে তিনি মরহুমা খোরশেদা বানুর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন, যিনি পরবর্তীতে খান ফাউন্ডেশন ও দি মিলেনিয়াম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারপারসন ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নকালে আব্দুল মোমেন খান ফজলুল হক হল ছাত্র সংসদের প্রথম স্পীকার নির্বাচিত হন।

তিনি উপস্থিত বক্তৃতা, বিতর্ক ও অন্যান্য সহশিক্ষা কার্যক্রমে পারদর্শী ছিলেন, যা তার পরবর্তী পেশাজীবনকেও সমৃদ্ধ করেছে। একজন সরকারি চাকরিজীবী হিসেবে তিনি যথাযোগ্য সুনাম অর্জন করেন এবং লাহোরে সিনিয়র সিভিল সার্ভিস একাডেমিতে প্রশিক্ষণ কোর্সে প্রথম স্থান অধিকার করেন। তৎকালীন রেক্টর ডি.কে. পাওয়ার (আই.সি.এস) পদে ব্যালেডিক্টরিয়ান সম্মান অর্জন করেন। যোগ্যতার নিরিখে তিনি বাংলাদেশের সরকারের সর্বোচ্চ চাকুরীর পদ কেবিনেট সচিবের আসনে আসীন হন।

তাঁর চাকুরিজীবনে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার, প্রাদেশিক সরকারের বিভিন্ন বিভাগের সচিব, এবং ১৯৭৭ সালে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের উপদেষ্টা কাউন্সিলে আমন্ত্রিত হন। তিনি বাংলাদেশ সরকারের খাদ্যমন্ত্রী (১৯৭৭-১৯৮২) এবং মন্ত্রিসভা সচিব (১৯৭৬-১৯৭৭) পদে দায়িত্ব পালন করেন। দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচনে নরসিংদী সদর থেকে সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

উল্লেখ্য, তিনি সমস্ত বাংলাদেশ ৩০০ আসনের মধ্যে সর্বোচ্চ ভোট লাভ করেছিলেন। ১৯৮২ সাল পর্যন্ত খাদ্য মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি নরসিংদী থানা প্রশাসনকে মহকুমা প্রশাসনে উন্নীত করেন। তার প্রচেষ্টায় মহকুমা ও থানা সদর দফতর রেল লাইনের উত্তর পাশে বর্তমান বিলাসদী মহল্লায় স্থাপিত হয়।

তিনি বর্তমান তরোয়া মহল্লায় নরসিংদী স্টেডিয়াম, ভেলানগরে জেলা কারাগার স্থাপন করেন। মরহুমের প্রচেষ্টায় নরসিংদীর মানুষ ১৯৭৯ সালে তিতাস গ্যাসের সংযোগ লাভ করে। এছাড়া ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র ও ঘোড়াশাল সার কারখানা স্থাপনের ক্ষেত্রে তার অবদান সর্বজন স্বীকৃত।

মরহুম আব্দুল মোমেন খান ১৯৮৪ সালের ১২ ডিসেম্বর ইহলোক ত্যাগ করেন। তাঁর প্রতি এলাকাবাসীর ছিল গভীর শ্রদ্ধা। গ্রামের বাড়ি চরনগরদীতে তিনি নিজ গ্রামের মানুষের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন।

 

একুশে সংবাদ/এ.জে

Link copied!