চট্টগ্রামের বোয়ালখালীর আহল্লা দরবার শরীফের প্রাণসত্তা, হাযত রওয়া মুশকিল ক্বোশা, সুলতানুল মুনাজ্জেরীন হযরতুল আল্লামা শাহসূফি গাজী আবুল মোকারেম মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম আল-কাদেরী আল-চিশতী প্রকাশ নূরী বাবা (রহ.)–এর ৪৯তম ওরশ শরীফ আগামীকাল শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর/২৭ অগ্রহায়ণ) আহল্লা দরবার শরীফে মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হবে।
ওরশ শরীফ পরিচালনা করবেন পীরে কামেল হযরতুল আল্লামা শাহসূফি মাওলানা আলহাজ্ব সৈয়দ এ. জেড. এম. সেহাবউদ্দীন খালেদ আল-কাদেরী আল-চিশতী (রহ.)–র সাহেবজাদা, আহল্লা দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন, রাহবারে তরিকত শাহসূফি সৈয়দ আবরার ইবনে সেহাব আল-কাদেরী আল-চিশতী (মা.জি.আ.) সাহেব কেবলা।
এদিকে ওরশের সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। প্রতি বছরের মতো এবারও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দর্শনার্থী, ভক্ত ও মুরিদানের ব্যাপক সমাগম হবে বলে জানা গেছে।
তথ্য মতে, সৈয়দ আবুল মোকারেম মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম (নূরী বাবা) আল-কাদেরী আল-চিশতী (রহ.) মাইজভান্ডার শরীফের গোড়াপত্তনকারী গাউসুল আজম হযরত শাহসূফি মাওলানা সৈয়দ আহমদ উল্লাহ (ক.)–এর আধ্যাত্মিক শিষ্য এবং আহল্লা দরবার শরীফের প্রাণপুরুষ কুতুবে যামান হযরত শাহসূফি মাওলানা কাজী আজাদ আলী (ক.)–এর জ্যেষ্ঠ পৌত্র।
তিনি আধ্যাত্মিক দরবারে ভক্ত-মুরিদদের কাছে আল্লাহ ও বিশ্বমানবতার মুক্তির দিশা, নবীকুলের শ্রেষ্ঠ প্রিয় হাবিব রাসূলুল্লাহ (সা.)–এর প্রেম, আদর্শ ও শিক্ষা প্রচার করে গেছেন। আল্লাহর দ্বীন ও তরিকতের খেদমতে তিনি তাঁর পূর্ণ জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। অলি-আল্লাহ ও মুরশিদের প্রতি ভক্তদের বারবার আদব শিক্ষা দিতেন।
ইতিহাসে পাওয়া যায়—ব্রিটিশ শাসনের শেষ দিকে একবার ভয়াবহ খরা দেখা দেয়। অনাবৃষ্টির কারণে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠে; খাল–বিল, নদী–নালা ও পুকুর শুকিয়ে যায়। টিউবওয়েল না থাকায় মানুষ পানির অভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে।
এমন সংকটকালে হযরত নূরী বাবা (রহ.) কদুরখীল গ্রামের এক ওয়াজ মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে যান। সেখানে গ্রামের মানুষেরা তাঁর কাছে দুর্দশার কথা তুলে ধরেন। তিনি তাঁদের বোঝান—সবই আল্লাহর ইচ্ছা; তিনিই সংকট দেন, তিনিই তা লাঘব করেন।
তবে সমবেত উলামায়ে কেরাম ও উপস্থিত জনতার বারবার অনুরোধে তিনি মোনাজাতে রাসূলুল্লাহ (সা.) ও বুযুর্গানে দ্বীনের অসিলা পেশ করে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করেন।
আর মোনাজাত শেষ হতেই ঝুমঝুম করে মুষলধারে বৃষ্টি নেমে আসে। উপস্থিত সবাই বিস্ময়াভিভূত হয়ে যান এবং কৃতজ্ঞতায় আবেগে আপ্লুত হন। মোনাজাত শেষে সবাই নূরী বাবা (রহ.)–এর হাতে বায়াত গ্রহণ করেন।
ইমাম যুরকানী মালেকী (রহ.) তাঁর ‘আল-মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়া’ গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন—গাউস, আবদাল, আকতাব, নুজাবা, নুকাবা প্রমুখ ওলিয়াদের মাধ্যমেই আল্লাহ দুনিয়ার বালা-মসীবত দূর করেন এবং বৃষ্টি বর্ষণ করান। হযরত নূরী বাবা (রহ.)–এর এই ঘটনা সেই হাদিসের বাস্তব প্রমাণ।
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

