ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল থানার ওসি আরশেদুল হকের বিরুদ্ধে সাধারণ ও নিরীহ মানুষকে গ্রেপ্তার করার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে এবং পরিস্থিতি এভাবেই চলতে থাকলে এলাকাবাসীকে সাথে নিয়ে থানা অভিমুখে ‘মার্চ’ কর্মসূচি দেওয়ার হুশিয়ারি দিয়েছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও ঠাকুরগাঁও-৩ (পীরগঞ্জ-রানীশংকৈল) আসনে গণ অধিকার পরিষদের প্রার্থী মামুনুর রশীদ মামুন। বৃহস্পতিবার রাতে তার ফেসবুক আইডিতে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ হুশিয়ারি দেন, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
৫ মিনিট ৪১ সেকেন্ডের ওই ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, গত মঙ্গলবার রাতে রানীশংকৈল থানার ওসি ধর্মগড় এলাকার খলিলুর রহমান নামে এক ব্যক্তিকে বাড়ি থেকে আটক করেন এবং তাকে জুলাই আন্দোলনের বিস্ফোরক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে জেলহাজতে পাঠান। অথচ দুদিন পরেই তার মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। মামুনুর রশীদ অভিযোগ করেন, খলিলুর রহমান আওয়ামী লীগের কোনো পদে নেই এবং কাউকে ক্ষতিও করেননি। তাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “এভাবে চলতে থাকলে এলাকাবাসীকে নিয়ে ‘মার্চ টু থানা’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।”
শুক্রবার সন্ধ্যায় মুঠোফোনে এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামুনুর রশীদ বলেন, ওসির বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষকে গ্রেপ্তার করে হয়রানি করার অভিযোগ তিনি পেয়েছেন। এসব অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি। অন্যথায় ওসির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া হবে বলেও পুনরায় হুশিয়ারি দেন।
এদিকে একই দিনে রাজোড় গ্রামের সারোয়ার নুর ও তার বাবা হামিদুর রহমানকে ‘আওয়ামী লীগের লোক’ আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ। তারা আওয়ামী লীগের কোনো পদে নেই বলেও জানা গেছে। তাদের বিষয়ে কথা বলতে বুধবার সকালে স্থানীয় বিএনপির কয়েকজন নেতা ও পীরগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সভাপতি নজমুল হুদা মিঠু থানায় গেলে, ওসি আরশেদুল হক তাদের তিরস্কার করেন এবং তাদের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা জিডি করেন বলে অভিযোগ করেন নজমুল হুদা মিঠু।
তিনি বলেন, “থানার ওসি আরশেদুল হক আওয়ামী লীগের তকমা দিয়ে সাধারণ লোকদের গ্রেপ্তার করছেন। আর টাকা খেয়ে উপজেলা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের সভাপতি-সম্পাদকসহ জুলাই বিপ্লবে বাধাদানকারীদের গ্রেপ্তার না করে তাদের সুরক্ষা দিচ্ছেন।” তিনি এসব অভিযোগ তদন্ত করে প্রতিকার দাবি করেন।
রানীশংকৈল উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি রজব আলী জানান, “সারোয়ার নুর আমাদের শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহযোগী সদস্য। তাকে আওয়ামী লীগ বলে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা এ ঘটনায় নিন্দা জানাই এবং তদন্ত করে ওসির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করছি।”
অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে রানীশংকৈল থানার ওসি আরশেদুল হক মোবাইল ফোনে বলেন, “অভিযোগগুলো সত্য নয়। আওয়ামী লীগের পদধারী নেতারা সবাই পলাতক, তাই তাদের গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তারা সবাই আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত। বিএনপি ও যুবদল নেতাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা জিডি করার অভিযোগও সঠিক নয়।”
একুশে সংবাদ//এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

