কুমিল্লার তিতাসে প্রতিবন্ধী এক কিশোরী ধর্ষণের ঘটনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক নেতা ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন (বৈছাআ) কমিটির সাবেক নেতাদের মধ্যে পক্ষে-বিপক্ষে অবস্থানকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের বাকবিতণ্ডা এবং উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়। এরপর স্থানীয় সচেতন মহল ও সাধারণ জনতা এনসিপি নেতা লুতফর রহমানকে গণধোলাই দেন। ঘটনাটি বুধবার দুপুরে জগতপুর ইউনিয়নের ভূঁইয়ার বাজার এলাকায় ঘটে।
স্থানীয়রা এবং ভিকটিমের পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের দড়িগাঁও পশ্চিম পাড়ার ২১ বছর বয়সি এক প্রতিবন্ধী কিশোরীকে থালা-বাসন ধোয়ার অজুহাতে বিল্ডিংয়ে নিয়ে মোঃ আক্তার হোসেন (৫২) নামের এক ব্যক্তি ধর্ষণ করেছেন। কিশোরী শারীরিক সম্পর্কে কিছু না বোঝায়; দীর্ঘ পাঁচ মাস পর শারীরিক অবস্থার অস্বাভাবিকতা ধরা পড়ে এবং ডাক্তারি পরীক্ষায় নিশ্চিত হয় যে কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন।
স্থানীয় পর্যায়ে ধর্ষকের সাথে বিবাহের মাধ্যমে ঘটনার সমাধান দেওয়ার চেষ্টা হলেও আক্তার হোসেইন কুমিল্লার এক শ্রেণীর দালালের প্ররোচনায় কোর্টে গিয়ে সালিশে উপস্থিত স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও ভিকটিমের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করেন। এতে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে ভিকটিমের মা তিতাস থানায় ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও সচেতন মহল বুধবার সামাজিকভাবে এক সালিশ আয়োজন করেন। এতে উপজেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন কমিটির সাবেক সদস্য সচিব আবু সাঈদ আসিফ ও দলের অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ভিকটিমের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে অংশগ্রহণ করেন। সালিশ চলাকালীন গ্রামের বাইরে থেকে কেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নেতারা এসেছেন তা নিয়ে এনসিপি নেতা লুতফর রহমানের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়।
সালিশ শেষে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা ও তাদের সহযোগীরা ফিরার পথে এনসিপি নেতা লুতফর রহমানের সঙ্গে পুনরায় বাকবিতণ্ডায় জড়ান। এক পর্যায়ে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে স্থানীয় সাধারণ জনতা তাদের ওপর প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লুতফর রহমানকে আটক করে গণধোলাই দেয়। বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নেতারা দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন।
এ বিষয়ে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের নেতা আবু সাঈদ আসিফ বলেন, “ধর্ষণের শিকার কিশোরীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা সালিশে অংশগ্রহণ করি। সেখানে আমাদের বিরুদ্ধে এনসিপি নেতা লুতফর রহমান বাকবিতণ্ডায় জড়ান এবং সালিশ শেষে আমাদের পথরোধ করে হামলার চেষ্টা করেন। স্থানীয়রা এমন অবস্থা দেখে তাকে গণধোলাই দিয়েছে।”
এনসিপি নেতা লুতফর রহমান পাল্টা অভিযোগ করেন, “আমি কুমিল্লায় ছিলাম। স্থানীয় সালিশে আবু সাঈদ আসিফ ও তার সহযোগীরা আমার উপর হঠাৎ হামলা চালায়। আমি কোনো ধর্ষকের পক্ষে অবস্থান নিইনি; কেউ প্রমাণ করতে পারলে দেখাক।”
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

