AB Bank
  • ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ অক্টোবর, ২০২৫, ২১ আশ্বিন ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

রাণীশংকৈলে খাল খননে বদলে গেল ১১ মৌজার কৃষকের ভাগ্য ও জীবিকা



রাণীশংকৈলে খাল খননে বদলে গেল ১১ মৌজার কৃষকের ভাগ্য ও জীবিকা

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার সীমান্তবর্তী রাউতনগর খাল পুনঃখননের ফলে এলাকার কৃষিতে এসেছে নতুন সম্ভাবনা। প্রায় আট কিলোমিটার দীর্ঘ খালটি পুনঃখননের মাধ্যমে বদলে গেছে আশপাশের ১১টি মৌজার প্রায় ২৫ হাজার একর জমির চিত্র। একফসলি জমি এখন তিন ফসলের সম্ভাবনায় মুখর, ফিরেছে কৃষকের মুখে হাসি।

খাল পুনঃখননের ফলে শুধু কৃষির উন্নয়নই হয়নি, দখলে থাকা সরকারি প্রায় ৩০ একর জমিও উদ্ধার হয়েছে।

দীর্ঘদিন ধরে পলি জমে রাউতনগর খালের পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে পড়েছিল। শ্রীপুর মৌজা থেকে শুরু হয়ে কেউটান বর্ডার ব্রিজ পর্যন্ত বিস্তৃত এই খাল একসময় ছিল জীববৈচিত্র্যের প্রাণকেন্দ্র। পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় প্রতিবছর আশপাশের জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতো। অধিকাংশ জমিতে বোরো ধান ছাড়া অন্য কোনো ফসল ফলানো সম্ভব ছিল না। ফলে কৃষকরা বছরের অর্ধেক সময় কাজবিহীন থাকতেন।

স্থানীয় কৃষক তোতা মিয়া বলেন, “আগে বর্ষায় জমিতে পুকুরের মতো পানি জমে ফসল নষ্ট হতো, আর শীতকালে খাল শুকিয়ে যেত—সেচের পানি পাওয়া যেত না। এখন আমরা বছরে তিন ফসল ফলাতে পারি, এটা আমাদের জন্য আশীর্বাদ।”

সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উদ্যোগে খাল পুনঃখননের পর দ্রুত পানি নিষ্কাশন সম্ভব হচ্ছে। ফলে কৃষকেরা এখন ধান ছাড়াও আলু, গম, ভুট্টা, তেলবীজ ও নানা ধরনের উচ্চমূল্যের সবজি চাষ করছেন। এতে কৃষকের আয় বাড়ছে বহুগুণে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাউতনগর খাল পুনঃখননের ফলে প্রায় ২৫ হাজার একর জমিতে তিন মৌসুমে ফসল ফলবে। এতে প্রতিবছর শত কোটি টাকার কৃষিপণ্য উৎপাদিত হবে, যা স্থানীয় অর্থনীতিকে চাঙ্গা করবে।

খালপাড়ের কৃষক শামসুল হক বলেন, “খাল খননের পর শুধু ধান নয়, এখন বাঁধাকপি, বেগুন, টমেটোসহ নানা সবজি চাষ করছি। আগে কাজের খোঁজে ঢাকায় যেতে হতো, এখন নিজের জমিতেই সারা বছর কাজ।”
আরেক কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, “আগে যেখানে এক ফসল হতো, এখন তিনটা ফসল তুলছি। আয় প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। সন্তানদের পড়াশোনার খরচ নিয়েও আর দুশ্চিন্তা নেই।”

পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী গোলাম জাকারিয়া বলেন, “উদ্ধার হওয়া সরকারি জমি স্থানীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নে কাজে লাগানো হবে। রাউতনগর খাল এখন শুধু একটি জলপথ নয়, এটি এই অঞ্চলের মানুষের নতুন স্বপ্ন ও সচ্ছলতার প্রতীক।”

ঠাকুরগাঁও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) আলমগীর কবির বলেন, “খাল খননের ফলে এখানকার কৃষি অর্থনীতি এখন শক্ত ভিত্তি পেয়েছে। এক সময় যেখানে শুধু ধান হতো, এখন সেখানে আলু, গম, ভুট্টা ও সবজি মিলিয়ে একাধিক ফসল হচ্ছে। কৃষকের জীবনমান পাল্টে গেছে।”

রাউতনগর খাল পুনঃখনন এখন রাণীশংকৈলের কৃষকদের জন্য একটি নতুন দিগন্ত—যা বদলে দিয়েছে জমির চিত্র, জীবিকা ও আশা।

 

একুশে সংবাদ/এ.জে

সর্বোচ্চ পঠিত - সারাবাংলা

Link copied!