গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার বাজারে নিত্যপণ্যের দাম অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণ ও সরবরাহ ব্যবস্থার ঘাটতি, পাশাপাশি চাঁদাবাজি ও টানা বৃষ্টি দাম বৃদ্ধির মূল কারণ হিসেবে দেখা দিয়েছে। অভ্যন্তরীণ পরিবহন ব্যয়ও এতে যুক্ত হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন বাজারের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে না। গত সপ্তাহে সবজির বাজার কিছুটা নীচের দিকে থাকলেও বৃষ্টির কারণে দাম আবার বেড়ে গেছে। চাল, ডাল, আটা, ময়দা, তেল থেকে শুরু করে মাছ ও গোশতসহ প্রায় সব নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
সোমবার (৬ অক্টোবর) উপজেলার বিভিন্ন বাজারে দেখা গেছে, সব ধরনের সবজির দাম অন্তত ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
প্রতি কেজি ঢেঁড়স ৮০ টাকা, কচুরলতি ৮০ টাকা, বেগুন ১০০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকা, চিচিঙ্গা, ঝিঙে, ধন্দুল ৮০ টাকা, পটোল ৭০ টাকা, শসা ৭০ টাকা, করলা ১০০ টাকা, শিম ২০০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৬০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, লাউ ৭০ টাকা, কাঁকরোল ৮০ টাকা, টমেটু ১২০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশি মূল্য বৃদ্ধির তালিকায় রয়েছে কাঁচামরিচের দাম। সাত দিনের ব্যবধানে ১০০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা জানান, টানা বৃষ্টির কারণে ক্ষেতের ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং মৌসুমি সবজির সরবরাহ কমে গেছে। কালীগঞ্জ বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. জামির হোসেন বলেন, “বৃষ্টিতে স্থানীয় বাজারে সবজির সরবরাহ কমেছে, অনেক ফসল নষ্ট হয়েছে। ফলে দাম বেড়েছে। বৃষ্টি যদি আরও কয়েক দিন থাকে, দাম আরও বাড়তে পারে।”
ক্রেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বাহাদুরশাদী ইউনিয়নের জামালপুর বাসাইর বাজারের ইসমাইল মোড়ল বলেন, “তিন মাস ধরে সবজির দাম বাড়ছে। এখন বৃষ্টির অজুহাত দেখানো হচ্ছে। প্রকৃত কারণ খুঁজে বের করার কোনো উদ্যোগ নেই। ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিয়ে দাম বাড়াচ্ছে।” বক্তারপুরের স্কুল শিক্ষক কামরুল হাসান মোল্লা বলেন, “বেতন বাড়ছে না, বাজারে গিয়ে প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতেও টাকা শেষ হয়ে যায়।”
বাজার মনিটরিং বিষয়ে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ.টি.এম কামরুল ইসলাম জানান, “সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাত ও পরিবহন ব্যয়ের কারণে কিছুটা অস্থিরতা হয়েছে। তবে পণ্যের সরবরাহ পর্যাপ্ত রয়েছে। দাম অযৌক্তিকভাবে বাড়ালে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।”
একুশে সংবাদ/এ.জে