ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলা যেন উন্নয়নের এক নতুন ভোরে জেগে উঠেছে। রবিবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এক উৎসবমুখর পরিবেশে একযোগে উদ্বোধন করা হয় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন প্রকল্পের।এ সময় উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ এবং জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম।
উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আয়োজিত এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি ও সুশীল সমাজের সদস্যদের উপস্থিতিতে পুরো উপজেলা পরিষদ চত্বর ছিল উৎসবমুখর।
উদ্বোধনকৃত প্রকল্পগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো উপজেলা পরিষদ চত্বরে নির্মিতব্য মিনি অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, যা স্থানীয় জনগণের বিনোদনের পরিসরকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। একই সঙ্গে “গ্রীন অ্যান্ড ক্লীন ভালুকা” কর্মসূচির আওতায় এক লাখ বৃক্ষরোপণের মহাযজ্ঞ শুরু হয়েছে যা ভবিষ্যতের জন্য একটি পরিবেশবান্ধব ও টেকসই ভালুকা গড়ার প্রত্যয় বহন করে।
এছাড়া ভালুকা গার্লস স্কুলের সামনে নির্মিত অভিভাবক ছাউনি, সড়কদ্বীপে লেটারিং ও ফোয়ারা স্থাপন প্রকল্প, এবং উপজেলা পরিষদ চত্বরে সৌন্দর্যবর্ধনমূলক বিভিন্ন কার্যক্রম ইতিমধ্যেই স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এসব প্রকল্প শুধু অবকাঠামো উন্নয়ন নয়, এটি এক অর্থে ভালুকাবাসীর জীবনমান উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি।
উদ্বোধনী পর্ব শেষে উপজেলা পরিষদ হলরুমে “ভালুকার সামগ্রিক উন্নয়নে করণীয়” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার মো. মোখতার আহমেদ এবং সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মুহিদুল আলম। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাসান আবদুল্লাহ আল মাহমুদের সঞ্চালনায় সভায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
অনুষ্ঠানের আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক ছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের উপস্থিতি, যা ভালুকার উন্নয়ন কার্যক্রমে সর্বস্তরের সহযোগিতা ও ঐক্যের প্রতীক হয়ে ওঠে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ভালুকা উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক রুহুল আমিন মাসুদ, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক সালাহউদ্দিন আহমেদ ও মজিবুর রহমান মজু, পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ্ব হাতেম খান, পৌর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আহসানউল্লাহ খান রুবেল ও আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান মামুন, উপজেলা জামায়াতের আমীর ফজলুল হক পাঠান সহ স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
তাদের উপস্থিতি প্রমাণ করে ভালুকার উন্নয়ন আজ রাজনৈতিক বিভাজনের ঊর্ধ্বে গিয়ে এক জাতীয় চেতনায় রূপ নিয়েছে।
উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় এখন ভালুকায় নতুন প্রত্যাশা জেগেছে মাদক নির্মূল, জুয়া খেলা বন্ধ ও অবৈধ কর্মকাণ্ডের প্রতিরোধ।
জনসাধারণের দাবি, যেমন ইউএনও’র নেতৃত্বে ভালুকা পেয়েছে সৌন্দর্য ও উন্নয়নের ছোঁয়া, তেমনি এবার প্রতিষ্ঠিত হোক সামাজিক শুদ্ধতা ও নৈতিক জাগরণ।
ভালুকা উপজেলা এখন উন্নয়ন ও সৌন্দর্যের এক অনন্য উদাহরণ। ইউএনও হাসান আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ-এর অবিরাম পরিশ্রম, দূরদৃষ্টি ও আন্তরিকতার ফলেই বদলে যাচ্ছে ভালুকার চেহারা।
উপজেলার প্রবেশমুখে স্থাপিত মনোমুগ্ধকর “I BHALUKA” সাইনবোর্ড ও আলোকসজ্জা এখন সবার দৃষ্টি কেড়েছে।
শুধু তাই নয় বৃক্ষরোপণ, ঝরনা স্থাপন, রাস্তা সংস্কার ও জনকল্যাণমূলক নানা প্রকল্পের মাধ্যমে তিনি ইতিমধ্যে ভালুকাবাসীর হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন।
একজন স্থানীয় প্রবীণ নাগরিকের ভাষায় “ভালুকার উন্নয়নে এমন একজন ইউএনও পেয়ে আমরা সত্যিই ভাগ্যবান। তাঁর কাজগুলো শুধু সৌন্দর্য বাড়ায় না, মানুষের মনে আশার আলোও জ্বালায়।”
এই উদ্যমী ও মানবিক প্রশাসক প্রমাণ করেছেন ইচ্ছা, সততা ও পরিশ্রম থাকলে পরিবর্তন সম্ভব।
ভালুকার মানুষ এখন দেখছে এক ভিন্নধর্মী প্রশাসনের চিত্র যেখানে উন্নয়ন শুধু কাঠামোর নয়, বরং মানুষের হৃদয়েরও।
উপজেলার সর্বস্তরের মানুষ বিশ্বাস করে, তাঁর নেতৃত্বে ভালুকা শুধু উন্নত নয়, একটি আদর্শ, সুন্দর ও মাদকমুক্ত সমাজে পরিণত হবে।
সভায় উপস্থিত সুধীজনেরা মত দেন এই ধারাবাহিক উন্নয়নমূলক উদ্যোগ বাস্তবায়নের মাধ্যমে ভালুকা উপজেলা হবে এক আধুনিক, পরিচ্ছন্ন ও বাসযোগ্য নগরীর আদর্শ মডেল।
তাদের মতে, এই কর্মসূচি ভালুকার উন্নয়নের ধারায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা, যা আগামী প্রজন্মের জন্য গড়ে দেবে একটি আলোকিত ভালুকা।
ভালুকার এই পরিবর্তন প্রমাণ করছে একজন দূরদর্শী ও মানবিক প্রশাসকের হাত ধরে কিভাবে একটি উপজেলা রূপ নিতে পারে উন্নয়ন, ঐক্য ও আশার প্রতীকে।
ভালুকা আজ শুধু উন্নয়নের গল্প নয়; এটি এক অনুপ্রেরণার নাম, একটি স্বপ্নের বাস্তব প্রতিচ্ছবি।
একুশে সংবাদ/এ.জে