পটুয়াখালীর দুমকীতে চুরির অভিযোগে এক কিশোরকে হাত-পা বেঁধে উল্টো করে ঝুলিয়ে রড ও লাঠি দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উপজেলার পঞ্চায়েত বাজার ব্রিজসংলগ্ন চরবয়েড়া গ্রামের একটি মুদি দোকানে এ নৃশংস ঘটনা ঘটে। নির্যাতনের ২ মিনিট ৩১ সেকেন্ডের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকাজুড়ে ক্ষোভ ও সমালোচনার ঝড় ওঠে।
নির্যাতনের শিকার কিশোর রমজান মল্লিক রাজাখালী গ্রামের বশির মল্লিকের ছেলে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে থানায় নিলেও পরবর্তীতে চুরির অভিযোগে মামলা দিয়ে আদালতে প্রেরণ করা হয়।
স্থানীয় শিশু ইমন, মাহফুজুর রহমান ও কামাল সিকদার জানান, দোকানদার জলিল সিকদার, তাঁর দুই স্ত্রী, আরিফ ও ফয়সাল মিলে কিশোরকে হাত-পা বেঁধে লোহার গ্রীলে উল্টো করে ঝুলিয়ে মারধর করেন। রড ও লাঠির আঘাতে কিশোর চিৎকার করলেও তাঁরা থামেননি। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রমজানকে উদ্ধার করে।
ভুক্তভোগীর ভাই সাকিব হোসেন অভিযোগ করে বলেন, “আমার ভাই মানসিক ভারসাম্যহীন। তুচ্ছ ঘটনায় তাঁকে যেভাবে নির্যাতন করা হয়েছে তা অমানবিক। আমরা নির্যাতনকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও কঠোর শাস্তি চাই।”
তবে অভিযুক্ত দোকান মালিক জলিল সিকদার অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, “রমজান আমার দোকানে নগদ টাকা চুরি করতে গেলে স্থানীয়রা তাকে ধরে। আমি কাউকে নির্যাতন করিনি।”
দুমকি থানার ওসি মো. জাকির হোসেন বলেন, “খবর পেয়ে কিশোরকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। চুরির অভিযোগে মামলা দিয়ে তাঁকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। নির্যাতনের বিষয়টি আমার জানা নেই।”
এদিকে ঘটনাটির ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় এলাকায় ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, কাউকে এভাবে প্রকাশ্যে নির্যাতন করার অধিকার কারও নেই। তাঁরা দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।
মানবাধিকারকর্মীদের মতে, এ ধরনের নৃশংস নির্যাতন আইনের শাসনের প্রতি চরম অবমাননা এবং সভ্য সমাজের জন্য লজ্জাজনক। দ্রুত বিচার না হলে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটতেই থাকবে।
একুশে সংবাদ/এ.জে