বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে গঠিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) সবসময় দেশের সব ধর্ম-বর্ণের মানুষের অধিকার ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পক্ষে কাজ করে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও মান্দা উপজেলা বিএনপির সভাপতি এম এ মতীন।
সোমবার দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে নওগাঁর মান্দা উপজেলার বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শনের সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, “প্রেসিডেন্ট শহীদ জিয়াউর রহমানের আমল থেকেই বিএনপির রাজনীতি হলো বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ, যার মূল লক্ষ্য এ দেশের সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা। বিএনপির কাছে বিদেশি নীতির কোনো স্থান নেই। এই দেশে হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই মিলে সাম্য, সহাবস্থান ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বসবাস করবে—এটাই বিএনপির রাজনৈতিক দর্শন।”
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে এম এ মতীন উপজেলার বিষ্ণুপুর, কসব, কাঁশোপাড়া, মৈনম ও প্রসাদপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে প্রতিটি মণ্ডপে নগদ অর্থ অনুদান প্রদান করেন এবং আয়োজক ও স্থানীয় ভক্তদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
এ সময় সফরসঙ্গী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সাধারণ সম্পাদক বেলাল হোসেন খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক শামসুল ইসলাম বাদল, হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি বিশ্বজিৎ কুমারসহ বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বিএনপি নেতা এম এ মতীন বলেন, “বিগত ১৭ বছরে যেসব ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় ছিল, তারা হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর বিভিন্নভাবে দমন-পীড়ন চালিয়েছে, জমি দখল করেছে, নিরাপত্তাহীনতা তৈরি করেছে। কিন্তু বিএনপি সবসময় সজাগ থেকেছে। দলের পক্ষ থেকে নেতাকর্মীরা পাহারার দায়িত্ব পালন করেছে এবং যে কোনো হামলা-নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের দলের অনেক নেতাকর্মী হিন্দু সম্প্রদায়ের পক্ষে কথা বলতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন। কিন্তু তারপরও আমরা মাঠ ছাড়িনি, কারণ এটা নৈতিক দায়িত্ব ও মানবিক কর্তব্য।”
বর্তমান সময়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমাদের সবার দায়িত্ব হলো যাতে এই দেশে কোনো ধর্মীয় সংখ্যালঘু নিজ ধর্ম পালন করতে গিয়ে আতঙ্কে না থাকে। সবাই যেন উৎসব উদযাপন করতে পারে নিরাপদে, আনন্দে, সম্মানের সঙ্গে।”
তিনি আরও জানান, “বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পরামর্শে এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে দল সব ধর্মের মানুষের পাশে রয়েছে এবং থাকবে।”
বিএনপি নেতাদের এই শুভেচ্ছা সফরকে স্বাগত জানান স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ ও সাধারণ ভক্তরা। তারা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পূজা উদযাপনে প্রশাসনের পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতাদের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
স্থানীয় পূজা উদযাপন পরিষদের একজন সদস্য বলেন, “বিএনপি নেতারা প্রতিবছর পূজায় আমাদের পাশে থাকেন। এবারও তারা এসে আমাদের খোঁজ নিয়েছেন, অনুদান দিয়েছেন—আমরা খুবই কৃতজ্ঞ।”
একুশে সংবাদ/এ.জে