AB Bank
  • ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৮ আশ্বিন ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

মাদ্রাসায় না এসেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে বেতন-ভাতা তুলছেন অধ্যক্ষ


Ekushey Sangbad
সাইফুল, মাদারগঞ্জ, জামালপুর
০৯:৩৬ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

মাদ্রাসায় না এসেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে বেতন-ভাতা তুলছেন অধ্যক্ষ

জামালপুরের মাদারগঞ্জে মাদ্রাসায় নিয়মিত উপস্থিত না থেকেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিয়ে বেতন-ভাতা তোলার অভিযোগ উঠেছে কড়ইচড়া ইউনিয়নের মিলনবাজার ভাংবাড়ী আলীম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আব্দুল ওয়াহেদের বিরুদ্ধে। তিনি জামায়াতের বহিষ্কৃত নেতা এবং মাদারগঞ্জ আল আকাবা সমবায় সমিতির পরিচালক।

জানা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারিতে কয়েকশ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মাদারগঞ্জ আল আকাবা সমবায় সমিতির গ্রাহকরা ৮ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যের বিরুদ্ধে মাদারগঞ্জ মডেল থানায় প্রতারণার মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে পরিচালক আব্দুল ওয়াহেদের নাম থাকায় তিনি গ্রেপ্তার এড়াতে আত্মগোপনে চলে যান। এরপর থেকে তিনি মাদ্রাসায় অনুপস্থিত। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি রয়েছে।

তবে অভিযোগ রয়েছে, পলাতক থাকা সত্ত্বেও তিনি হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে নিয়মিত বেতন-ভাতা তুলছেন। রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) বিষয়টি জানতে সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, অধ্যক্ষের অফিসকক্ষ ফাঁকা। কিন্তু হাজিরা খাতায় তার নিয়মিত উপস্থিতির স্বাক্ষর রয়েছে।

এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসার একাধিক শিক্ষক জানান, জানুয়ারি মাস থেকে অধ্যক্ষ মাদ্রাসায় আসেননি। এরপরও তিনি কীভাবে বেতন পাচ্ছেন তা তারা জানেন না। নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. রহমতুল্লাহ, আশিনুর ও মিলন হাসানসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, অধ্যক্ষ গত পাঁচ-ছয় মাস ধরে মাদ্রাসায় আসেননি।

স্থানীয় বাসিন্দা আবু বক্কার সিদ্দিক বলেন, “মাদ্রাসায় না এসেও কীভাবে তিনি বেতন উত্তোলন করেন? বিষয়টি কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক।”

মাদ্রাসাটির উপাধ্যক্ষ মাওলানা মামুনুর রশীদ বলেন, “অধ্যক্ষ মহোদয় মাদ্রাসায় না এসেও বেতন তুলছেন—এ বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে তিনি এডহক কমিটির সভাপতির কাছ থেকে তিন মাসের ছুটি নিয়েছেন।” তিন মাসের ছুটি শেষ হওয়ার পরও ছয় মাস ধরে তিনি অনুপস্থিত—এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো উত্তর দিতে পারেননি তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অধ্যক্ষ আব্দুল ওয়াহেদের বিরুদ্ধে এর আগেও নানা অভিযোগ রয়েছে। তিনি একসময় জামায়াতের সক্রিয় রাজনীতি করতেন এবং ছিলেন উপজেলা জামায়াতের আমীর। পরবর্তীতে নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের কারণে দল থেকে বহিষ্কৃত হন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. ফরহাদ হোসেন।

জামায়াত থেকে বহিষ্কারের পর তিনি তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি মাদ্রাসার তিন কর্মচারীর বেতন বন্ধ করে দেন। এ নিয়ে জাতীয় ও স্থানীয় গণমাধ্যমেও সংবাদ প্রকাশিত হয়।

অভিযোগ রয়েছে, তিনি মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের ওপর অতিরিক্ত নজরদারি করতেন। তার কর্মকাণ্ডে অধিকাংশ শিক্ষক-কর্মচারী অতিষ্ঠ হলেও প্রকাশ্যে মুখ খোলেননি।

অভিযুক্ত অধ্যক্ষের ব্যবহৃত মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়, ফলে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

নাদির শাহ, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, “মাদ্রাসায় না এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে বেতন তোলার সুযোগ নেই। বিষয়টি তদন্ত করে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

 

একুশে সংবাদ/জা.প্র/এ.জে

Link copied!