কোটচাঁদপুরের হাল চাষি ইকতার হোসেন (৪০) এখনও মানসিক ও শারীরিকভাবে প্রভাবিত। তিনি গত ৪ সেপ্টেম্বর ড্রাগন বাগান থেকে বিদ্যুতায়িত হয়ে ঘটনাস্থল থেকে বেঁচে ফিরেছিলেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা বার্ণ ইউনিটের এক চিকিৎসকের পরামর্শে বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
ইকতার হোসেন কোটচাঁদপুরের তালসার গ্রামের হাজীপাড়ার খেজের আলীর ছেলে। পেশায় তিনি হাল চাষি; গরু দিয়ে মানুষের জমিতে চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন।
জানা গেছে, ৪ সেপ্টেম্বর সকালে জীবিকার তাগিদে তিনি তার দুইটি গরুর সঙ্গে কোটচাঁদপুরের তালসার গ্রামের কুঠির দর্গা পাড়ার মাঠে হাল চাষ করতে যান। জমির মালিক শাহাদাত হোসেন ডেঙ্গু (৫০) ওই সময় পাশেই উপস্থিত ছিলেন। ড্রাগন বাগানের চারপাশে জিআই তামায় বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল। হাল চাষের সময় ইকতার হোসেন, তার একটি গরু এবং জমির মালিক বিদ্যুতায়িত হন। ঘটনাস্থলেই মারা যান জমির মালিক শাহাদাত হোসেন ও ইকতার হোসেনের একটি গরু। ইকতার হোসেন এবং তার অপর একটি গরু বেঁচে ফেরে।
গুরুতর আহত হয়ে অচেতন অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ইকতার হোসেন। তাঁর দুই হাতের কব্জি দগ্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে তিনি বাড়িতে চিকিৎসা নিচ্ছেন এবং কয়েকদিন পর অপারেশন করা হবে।
ইকতার হোসেন বলেন, “সকাল ৬টা থেকে ৬.৪০ মিনিটের মধ্যে আমি হাল দিয়ে চাষ শুরু করি। এক পাক ঘুরতেই ডানের গরু ড্রাগন বাগানের পাশে গিয়ে শুয়ে পড়ল। আমি রাগান্বিত হয়ে গরুর পিঠে লাঠি দিয়েই আঘাত করি। তখনই বিদ্যুতায়িত হই। মনের জোরে গরুটি মুক্ত করি এবং চিৎকার করে বাঁচার চেষ্টা করি। এরপর জমির মালিক ছুটে এসে সাহায্য করার চেষ্টা করেন।”
তিনি আরও জানান, “জ্ঞান ফেরার পর আমি কোটচাঁদপুর হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছি। জানতে পারি জমির মালিক শাহাদাত হোসেন ও আমার গরু মারা গেছে। আমার দুই হাতের কব্জি পুড়ে গেছে। চিকিৎসা ব্যয় ও এনজিও কিস্তি মিলিয়ে বর্তমানে আমি মহাবিপাকে আছি।”
ঘটনার পর জমির মালিক শাহাদাত হোসেন ডেঙ্গুর স্ত্রী কোটচাঁদপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন। তবে হাল চাষি ইকতার হোসেন ব্যয়ভার বহনের কারণে মামলা করেননি। পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষও অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
একুশে সংবাদ/ঝি.প্র/এ.জে