ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার শালীহর গ্রামে ১৯৭১ সালের ২১ আগস্ট পাকবাহিনীর নির্মম গণহত্যায় ১৪ জন শহীদ হন। একই দিনে ওই গ্রামের ছাবেদ আলী এবং তার আগে ১৬ মে মধু সূদন ধরকে ধরে নিয়ে যায় পাকিস্তানি সেনারা। এরপর তাদের আর খোঁজ মেলেনি। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও শহীদ পরিবারগুলো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত।
২০২১ সালে শালীহর বধ্যভূমিতে গণপূর্ত ও গৃহায়ন অধিদপ্তরের উদ্যোগে প্রায় ৭১ লাখ টাকায় নির্মিত হয় একটি দৃষ্টিনন্দন স্মৃতিসৌধ। প্রতিবছর ২১ আগস্ট স্থানীয় প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ পরিবার ও সর্বস্তরের মানুষজন এখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তবে অবহেলা ও রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে বর্তমানে বধ্যভূমি ও স্মৃতিসৌধটির বেহাল দশা দেখা দিয়েছে। সীমানা প্রাচীর না থাকায় বধ্যভূমিতে গবাদিপশু চরানো হয়, ভেতরে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয় এবং চারপাশে আগাছার জঞ্জাল জমে থাকে।
এই পরিস্থিতিতে উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবিদ হাসান রাহাতের উদ্যোগে বুধবার ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা স্বেচ্ছাশ্রমে বধ্যভূমি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেন। শহীদদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তারা স্থানটি ধুয়ে-মুছে নতুন রূপ দেন এবং শহীদ ১৬ জনের নামে একটি করে বৃক্ষরোপণ করেন।
উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য তানভীর আহমেদ বলেন, “২১ আগস্টের শহীদদের স্মৃতিতে নির্মিত স্মৃতিসৌধটি সুরক্ষিত করা প্রয়োজন। আমরা স্বেচ্ছাশ্রমে পরিষ্কার করেছি। প্রশাসনের কাছে দাবি, বধ্যভূমির চারপাশে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ এবং সরকারি রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হোক।”
উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক আবিদ হাসান রাহাত বলেন, “স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও শহীদ পরিবারগুলো রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায়নি। অনেক পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে। সরকার যেন রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি প্রদান করে এবং অসহায় পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ায়।”
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজ আফিয়া আমিন পাপ্পা জানান, “শালীহর বধ্যভূমি সংস্কারের বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। বিভিন্ন উন্নয়ন বরাদ্দ থেকে সমন্বয় করে সংস্কার ও সৌন্দর্যবর্ধনের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
একুশে সংবাদ/ম.প্র/এ.জে