এক সময় যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম ছিল গরুর গাড়ি। কিন্তু সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এগিয়ে চলা আধুনিক যান্ত্রিক যানবাহনের ভিড়ে বিলুপ্তির পথে ফরিদপুরের চরভদ্রাসনের ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি।
গ্রামবাংলার এ ঐতিহ্যবাহী বাহন একসময় কৃষি পণ্য পরিবহন, মানুষ যাতায়াত কিংবা উৎসব-অনুষ্ঠানে ব্যবহৃত হতো। চরভদ্রাসনসহ ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন প্রত্যন্ত অঞ্চলে এখনও কোথাও কোথাও গরুর গাড়ির দেখা মিললেও শহর ও জনবহুল এলাকাগুলোতে এটি এখন প্রায় অদৃশ্য।
বিশেষজ্ঞ ও স্থানীয়দের মতে, গরুর গাড়ি বিলুপ্তির প্রধান কারণ হলো ইঞ্জিনচালিত যানবাহনের সহজলভ্যতা। বাস, ট্রাক, রিকশা, ভ্যান ও মোটরসাইকেলের ব্যাপক প্রসারে গরুর গাড়ির ব্যবহার দ্রুত কমে গেছে।
এছাড়া সময়ের চাহিদা অনুযায়ী দ্রুতগামী পরিবহনের প্রয়োজন, গরুর গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়, গাড়োয়ানদের মজুরি, এবং পরিবেশগত কিছু বিতর্কও এর অস্তিত্বকে সংকটাপন্ন করে তুলেছে। শহরের সুযোগ-সুবিধা গ্রাম পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ার সঙ্গেও বদলে গেছে গ্রামীণ মানুষের জীবনধারা ও যোগাযোগ পদ্ধতি।
স্থানীয়রা জানান, নতুন প্রজন্মের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী এ বাহনের প্রতি আগ্রহের অভাব রয়েছে। কেউ কেউ আবার মনে করেন, গরুর গাড়ি ধীরগতির হওয়ায় আজকের দ্রুতচলমান জীবনের সঙ্গে এটি আর মানিয়ে নিতে পারছে না।
এক সময়ের পথ চলার বিশ্বস্ত এই বাহনটি আজ শুধুই স্মৃতির পাতায়। সংরক্ষণের উদ্যোগ না নিলে গরুর গাড়ি শিগগিরই হারিয়ে যেতে পারে ইতিহাসের পাতায়।
একুশে সংবাদ/মা.প্র/এ.জে