নরসিংদীর বেলাব উপজেলার কাশিমনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে মোবাইল ফোন ব্যবহার করে টিকটক ভিডিও ধারণ ও নাচানাচির ঘটনায় সাতজন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট এবং শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের দায়ে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে বুধবার (২৩ জুলাই ) ক্লাস চলাকালীন সময়। অভিযোগ রয়েছে, ৮ম শ্রেণির ২ জন ও ৯ম শ্রেণির ৫ জন শিক্ষার্থী শিক্ষক অনুপস্থিত থাকার সুযোগে শ্রেণিকক্ষে মোবাইল ফোনে নাচানাচির ভিডিও ধারণ করে, যা পরে টিকটকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ রুবায়েত হোসেন জানান, “৮ম ও ৯ম শ্রেণির ৭ জন শিক্ষার্থী ক্লাসরুমে ঢুকে মোবাইলে টিকটক নাচানাচি করছিল। এজন্য তাদের সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। পরবর্তীতে ম্যানেজিং কমিটির সভায় পরিপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানিয়েছেন, শিক্ষার্থীদের হাতে মোবাইল ফোন থাকা নিয়মবহির্ভূত এবং এটি বিদ্যালয়ের শৃঙ্খলার চরম লঙ্ঘন। বিষয়টি তদন্ত করে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের পক্ষে মত দিয়েছেন তারা।
বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. ইব্রাহিম খলিলকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে একাধিক অভিভাবক জানান, “বিদ্যালয় শুধু পাঠদানের স্থান নয়, এটি নৈতিক শিক্ষারও কেন্দ্র। প্রযুক্তির অপব্যবহার ঠেকাতে বিদ্যালয় চত্বরে মোবাইল পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা উচিত। শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ যেন নষ্ট না হয়, তবে শৃঙ্খলা প্রশ্নে কোনো আপস করা যাবে না।”
ঘটনার পরপরই বিদ্যালয়ে এক জরুরি সভায় অভিযুক্তদের সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, যা ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণসহ প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য নিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেবে।
বেলাব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল করিম জানান, “আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারছি। বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই ঘটনা আবারও স্মরণ করিয়ে দেয়, প্রযুক্তির যেমন ভালো দিক আছে, তেমনি অপব্যবহারে ফল হতে পারে ভয়াবহ। তাই শিক্ষক, অভিভাবক ও সমাজ—তিন পক্ষকেই দায়িত্ব নিয়ে শিক্ষার্থীদের সঠিক পথে পরিচালনার জন্য একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
একুশে সংবাদ/ন.প্র/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

