কুমিল্লার হোমনায় এক ভুয়া চক্ষু চিকিৎসককে এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে উপজেলা প্রশাসন। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলার চৌরাস্তার মোড়ে ‘শারবীন চশমা ঘর’ নামক প্রতিষ্ঠানে ডা. পরিচয়ে চেম্বার করা মো. মহসীনের ভুল চিকিৎসায় এক ব্যবসায়ীর চোখ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার (২৩ জুলাই) ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন হোমনা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ক্ষেমালিকা চাকমা।
ভ্রাম্যমাণ আদালতে মো. মহসীনকে ভুয়া চিকিৎসক হিসেবে প্রমাণিত হওয়ায় এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে তাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়।
ভুক্তভোগী রোগী সাইফুল ইসলাম শামীম হোমনা আদর্শপাড়ার বাসিন্দা এবং একজন টেলিকম ব্যবসায়ী। তিনি জানান, চোখে পানি পড়ার সমস্যায় তিনি শারবীন চশমা ঘরে চিকিৎসা নিতে যান। ডা. মহসীনের দেওয়া ওষুধ ব্যবহারের পর তার চোখে গুরুতর সংক্রমণ দেখা দেয়। পরে তিনি ঢাকার ইবনে সিনা হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেন। সেখানে চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. মো. আব্দুল হাই নিশ্চিত করেন যে ভুল চিকিৎসার কারণে চোখের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে এবং অপারেশন ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।
পরে সাইফুল ইসলাম লিখিতভাবে অভিযোগ দাখিল করেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুস সালাম সিকদারের কাছে। তিনি বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করলে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়।
এছাড়া অভিযুক্ত মহসীন ভবিষ্যতে ‘ডা.’ পরিচয়ে আর কোনো চেম্বার পরিচালনা করবেন না—এই মর্মে লিখিত অঙ্গীকারনামা প্রদান করেন।
এ বিষয়ে হোমনা ইউএনও ক্ষেমালিকা চাকমা বলেন, “ভুল চিকিৎসায় ভুক্তভোগীর চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার অভিযোগ পেয়ে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। বৈধ সনদপত্র না থাকায় তাকে ভুয়া চিকিৎসক হিসেবে চিহ্নিত করে জরিমানা ও কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।”
প্রশাসনের এই পদক্ষেপে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এলাকাবাসীর দাবি, ভুয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে এমন অভিযান যেন নিয়মিত চলতে থাকে, যাতে কেউ আর চিকিৎসার নামে প্রতারণার শিকার না হয়।
একুশে সংবাদ/কু.প্র/এ.জে