চুয়াডাঙ্গায় স্বাস্থ্য সহকারী পদে নিয়োগ পরীক্ষা ঘিরে অনিয়ম ও স্বচ্ছতা নিয়ে ফের বিতর্কের ঝড় উঠেছে। লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর পরীক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন—অনুপস্থিত থাকা সত্ত্বেও বহু প্রার্থীর নাম উত্তীর্ণদের তালিকায় এসেছে।
রবিবার (২২ জুন) চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ও জনবল নিয়োগ কমিটির সদস্যসচিব ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। এরপর থেকেই ফলাফল নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনা ও প্রশ্ন উঠতে থাকে।
এর আগে, শুক্রবার (২০ জুন) সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সদর ও দামুড়হুদা উপজেলার ১৯টি কেন্দ্রে একযোগে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তবে পরীক্ষার আগেই কেন্দ্র পরিবর্তন, কেন্দ্র তালিকা প্রকাশে বিলম্ব, গভীর রাতে সিভিল সার্জনের কার্যালয় খোলা রাখা—এসব নিয়ে উঠেছিল নানা প্রশ্ন। যা এখন ফলাফল প্রকাশের পর আরও গভীর সংকটে পরিণত হয়েছে।
লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ফাতেমা খাতুন দোলন ফেসবুকে লিখেছেন,“আমার রোল ২৬৩। আমার সামনে, পেছনে ও পাশে কেউ ছিল না। অথচ ২৬২ নম্বর রোলধারী পরীক্ষার্থী উত্তীর্ণদের তালিকায় আছেন। এটা কীভাবে সম্ভব?”
একইভাবে সার্থেয়া মল্লিক নামে আরেক প্রার্থী লিখেছেন,“চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের ৫৩৫ নম্বর কক্ষে পরীক্ষা দিই। পাশের ৯৯০ নম্বর রোলধারী অনুপস্থিত ছিলেন। কিন্তু তাকেও উত্তীর্ণ দেখানো হয়েছে!”
এছাড়া চুয়াডাঙ্গা কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের ৩০২ নম্বর কক্ষে পরীক্ষা দেওয়া আয়েশা হুসাইন অভিযোগ করেন,“এক পরীক্ষক একজনকে উত্তর বলে দিচ্ছিলেন। আমি প্রতিবাদ করলে কিছুক্ষণ থেমে যান, পরে আবার বলেন। পরে আমি হল পরিদর্শকের কাছে অভিযোগ করি।”
তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন—“পরীক্ষার আগের রাতে কেন সিভিল সার্জন অফিস রাত দুইটা পর্যন্ত খোলা ছিল?”
এদিকে পরীক্ষার আগে দুইবার কেন্দ্র ও সিট পরিবর্তনের অভিযোগও করেছেন অনেক পরীক্ষার্থী। তাদের অভিযোগ, এসএমএসে তথ্য জানানো হলেও বিভ্রান্তি তৈরি হয়, অনেকেই সঠিক কেন্দ্র খুঁজে পেতে সমস্যায় পড়েন।
লিখিত পরীক্ষার ফলাফল, অনুপস্থিতদের উত্তীর্ণ দেখানো এবং নানা অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে সিভিল সার্জন ও জনবল নিয়োগ বোর্ডের সদস্যসচিব ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার মন্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
সাধারণ নাগরিক, চাকরি প্রার্থী ও ছাত্র সংগঠনগুলো নিয়োগ পরীক্ষা নিয়ে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
একুশে সংবাদ/চু.প্র/এ.জে