গাজীপুরের শ্রীপুরে চাঁদাদাবি, পরিবহন ভাঙচুর, রাতের আঁধারে বাস পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি ও হেলপারকে ধরে নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দেড় ঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে প্রভাতি-বনশ্রী পরিবহনের শ্রমিকেরা।
এ সময় মহাসড়কের উভয় পাশে দীর্ঘ যানজটে আটকা পড়ে অফিসগামী যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হয়। সোমবার (২ মে) সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত দেড় ঘণ্টা মহাসড়কের উপজেলার জৈনাবাজারে সড়ক অবরোধ করে তারা।
প্রভাতি-বনশ্রী পরিবহনের ব্যবস্থাপক তোফায়েল আহমেদ অভিযোগ করেন, রবিবার (১ জুন) দিবগত রাত ২টার দিকে গাজীপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ফাহিম আহমেদ ও তার ১৫-২০জন সহযোগী জৈনাবাজারের পশ্চিমে প্রভাতি-বনশ্রী পরিবহনের স্ট্যান্ডে এসে দুইটি বাস ভাঙচুর করে শ্রমিকদের মারধরে আহত করে। প্রতি গাড়ি থেকে ৫০০-১০০০ টাকা করে চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দিলে রাতে বাসে আগুন দিয়ে আমাদেরকে পুড়িয়ে হত্যার হুমকি দেয়। আমাদের অনেক স্টাফ বাসেই রাতযাপন করে থাকে। তাদের হুমকিতে আমরা ভয়ে আছি। আহতরা হলো বাসচালক সুজন (৩০), মানিক মিয়া (৩০), হেলপার (চালকের সহকারী) মনির হোসেন (২৩), আল আমিন (২২), নজরুল ইসলাম (৩৩), রুবেল (২৩), শাহীন (২১), ফরিদ হোসেন (২৩), রেজাউল (৩০), সাব্বির (২২), রনি (৩০) এবং সোহেল (৫০)। তারা প্রত্যেকেই স্থানী বিভিন্ন ফার্মেসি থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
এসময় প্রতিবাদ করায় ওই পরিবহনের হেলপার (চালকের সহকারী) আরিফ হোসেনকে তারা ধরে নিয়ে যায়। এখনো ওই হেলপার তাদের কাছে রয়েছে। চাঁদাদাবি, পরিবহন ভাঙচুর, শ্রমিকদেরকে মারধরের সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং হেলপার আরিফ হোসেনকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে পরিবহন শ্রমিকেরা সকাল ৮টা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত মহাসড়কে এলোপাতাড়ীভাবে বাস রেখে সড়ক অবরোধ করে। পরে সেনাবাহিনী, হাইওয়ে পুলিশ এবং থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌছে হেলপারকে উদ্ধার এবং তাদের বিচারের আশ্বাস দিলে শ্রমিকেরা মহাসড়ক থেকে সরে গেলে সাড়ে ৯টার দিকে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শী এমসি বাজার এলাকার রিদিশা পোশাক কারখানার শ্রমিক রেজাউল করিম বলেন, বাস শ্রমিকেরা সকাল থেকে মহাসড়কে তাদের যানবাহন এলাপাতাড়ীভাবে রেখে সড়ক অবরোধ করে রাখে। এতে করে আমরা যারা পোশাক কারখানায় চাকরি করি তাদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। এক মিনিট লেট করে অফিসে প্রবেশ করলে আমাদের হাজিরা ৫০০ টাকা কেটে রাখা হয়। মাসের ৫ থেকে ৬ দিন কোনো না কোনো কারণে বিভিন্ন সংগঠনের কর্মীরা সড়ক অবরোধ করে রাখে। আমরা যারা সাধারণ মানুষ আছি তাদের অনেক ক্ষতি হয়ে যায়।
জৈনা বাজারের মুদি ব্যবসায়ী ছলিম উদ্দিন বলেন, প্রায়ই মহাসড়ক অবরোধের ঘটনা ঘটে। কখনো পোশাক শ্রমকি, কখনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা, কখনো বাস শ্রমিকেরা তাদের দাবি দাওযা নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এ সড়কে চলাচলকারী যাত্রী, আশপাশের স্কুল কলেজগামী শিক্ষার্থী এবং পোশাক শ্রমকিসহ বিভিন্ন অফিসগামী যাত্রীদের দুর্ভোগ নিয়ে গন্তব্যে যেতে হয়।
কোনো কিছুর দাবি উঠলেই সবাই মহাসড়কে এস অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে থাকে। যেন কারো কিছু বলার নেই। যে যার মতো করে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে যাচ্ছে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ আব্দুল বারিক বলেন, খবর পেয়ে সেনাবাহিনী, হাইওয়ে পুলিশ এবং থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিচারের আশ্বাস দিলে বাস শ্রমিকেরা সড়ক থেকে সরে গেলে যানবাহন চলাচল স্বাভবিক হয়।
একুশে সংবাদ / গা.প্র/এ.জে