সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ না থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে যাতায়াতকারী পাসপোর্টধারী যাত্রীরা। শনিবার (১৭ মে) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ না থাকায় ইমিগ্রেশনের কার্যক্রমে ব্যাঘাত ঘটে। এর মধ্যে প্রায় এক ঘণ্টা ইমিগ্রেশনের সকল কার্যক্রম বন্ধ ছিল। এ সময় দুই দেশের পাসপোর্টধারী যাত্রীরা তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন। বিশেষ করে বয়োজ্যেষ্ঠ ও অসুস্থ যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেন, দেশের সবচেয়ে ব্যস্ততম স্থলবন্দর বেনাপোলে নেই সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, নেই বসার জন্য কোনো চেয়ার কিংবা সুপেয় পানির ব্যবস্থাও। এমন গরমে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকলে হিট স্ট্রোকসহ বড় ধরনের স্বাস্থ্যঝুঁকি দেখা দিতে পারে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সকাল ৯টা থেকে বিদ্যুৎ না থাকায় ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ নিজেদের জেনারেটরের মাধ্যমে প্রায় তিন ঘণ্টা সেবা দেয়। পরে জেনারেটর বিশ্রামের জন্য এক ঘণ্টার জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। এ সময় আগমন ও বহির্গমন ফটকে দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থাকেন যাত্রীরা। ক্যান্সারসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত যাত্রীরা মেঝেতে বসে বা শুয়ে সময় কাটান।
ভারত থেকে চিকিৎসা শেষে ফেরা ঢাকার যাত্রী সুমন মাস্টার বলেন, “আমার স্ত্রী ক্যান্সারে আক্রান্ত। ভারতে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরে এখানে এসে এমন পরিস্থিতিতে পড়েছি। গরমে দাঁড়িয়ে থাকতে না পেরে আমার স্ত্রী মেঝেতেই শুয়ে পড়েছেন। বসার জন্য নেই কোনো চেয়ার, পানির ব্যবস্থাও নেই। এটা একেবারেই অমানবিক।”
বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইব্রাহিম আহম্মেদ বলেন, “বিদ্যুৎ চলে গেলে আমাদের জেনারেটর দিয়ে ২-৩ ঘণ্টা সেবা দেওয়া সম্ভব। পরে জেনারেটর বিশ্রামে রাখতে হয়, না হলে দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে। যদি সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকত, তাহলে যাত্রীদের এ দুর্ভোগ হতো না।”
বেনাপোল বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আজিজুল হক বলেন, “প্রতিমাসে ২-৪ বার বিদ্যুৎ উন্নয়ন কাজের অজুহাতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। এতে ইমিগ্রেশনের কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটে। দেশের সবচেয়ে ব্যস্ত এই স্থলবন্দরে ২৪/৭ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, “এখান থেকে সরকার প্রতি বছর হাজার কোটি টাকা রাজস্ব পায়, অথচ যাত্রীসেবার এমন অব্যবস্থা দুঃখজনক।”
একুশে সংবাদ/ য.প্র/এ.জে