মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার প্রতিটি এলাকায় এখন গাছে গাছে ঝুলছে রসালো ও পুষ্টিগুণে ভরপুর জাতীয় ফল কাঁঠাল। বাড়ির আঙিনা থেকে শুরু করে রাস্তার ধারে, পাহাড়, টিলা এবং জঙ্গলের ভেতরে থাকা গাছগুলোতে ধরেছে বিপুল পরিমাণে কাঁঠাল। গাছের গোড়া থেকে মগডাল পর্যন্ত ঝুলছে সবুজ কাঁঠালের সমাহার।
বুধবার (১৪ মে) সকাল, কমলগঞ্জ পৌর এলাকার ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশনের পাশে শতাধিক কাঁঠাল ঝুলতে দেখা যায় কয়েকটি গাছে। সেখানে দাঁড়িয়ে পর্যটক ও যাত্রীরা ছবি তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি গাছে ঝুলছে বড় বড় আকৃতির কাঁঠাল। মনে হচ্ছে যেন প্রকৃতি নিজ হাতে সাজিয়েছে কাঁঠালের উৎসবে। গ্রামের রাস্তার ধারে, পুকুর পাড়ে, বিদ্যালয় ও অফিস চত্বরের গাছগুলোতেও একই চিত্র।
জ্যৈষ্ঠ মাস পেরিয়ে আষাঢ় মাস এলেই এই কাঁঠাল পরিপক্ক হয়ে বাজারে আসবে। ইতিমধ্যে কিছু পাকা কাঁঠাল বাজারে উঠতে শুরু করেছে। পাইকাররা আগেভাগেই বাগান কিনে কাঁঠাল সংগ্রহ শুরু করেছেন।
শমশেরনগর গ্রামের নিজাম উদ্দিন জানান, “এবার বাজারে কাঁচা কাঁঠালের ভালো চাহিদা থাকায় আগেভাগেই বিক্রি করে বেশ লাভবান হয়েছি। এখানকার লোকজন কাঁঠালের বিচি দিয়ে রান্না করা তরকারি, বিশেষ করে শুটকি ভর্তা খুব পছন্দ করে।”
চন্ডীপুর গ্রামের কৃষক খালেদ আহমদ বলেন, “এবার আমের ফলন তুলনামূলকভাবে কম হওয়ায় কাঁঠালের চাহিদা অনেক বেশি। পাইকাররা গ্রাম থেকে কাঁঠাল কিনে নিয়ে যাচ্ছে এবং ভালো লাভ করছে।”
টিলাগাঁও গ্রামের বাসিন্দা নয়ন মিয়া জানান, তাদের বাড়ির ১২টি কাঁঠাল গাছে প্রচুর ফল ধরেছে। পরিবারের প্রয়োজন মিটিয়ে আত্মীয়-স্বজনদের উপহার হিসেবে কাঁঠাল পাঠান। অনেক সময় যাদের গাছ নেই, তারাও কাঁঠাল নিয়ে যান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়েন্ত কুমার রায় জানান, “কমলগঞ্জ উপজেলার মাটি ও জলবায়ু কাঁঠাল চাষের জন্য উপযোগী। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভালো ফলন হয়েছে। কাঁঠাল একটি জনপ্রিয় ও পুষ্টিকর জাতীয় ফল। প্রতিটি গাছে নজরকাড়া ফল দেখা যাচ্ছে।”
একুশে সংবাদ/মৌ.প্র/এ.জে