AB Bank
ঢাকা সোমবার, ০৭ অক্টোবর, ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

দাফনের ৯ দিন পর বাড়ি ফিরল রোকসানা


Ekushey Sangbad
জেলা প্রতিনিধি, কুমিল্লা
০২:৫১ পিএম, ৩০ জুন, ২০২৪
দাফনের ৯ দিন পর বাড়ি ফিরল রোকসানা

কুমিল্লায় দাফনের ৯ দিন পর বাড়ি ফিরেছেন নিখোঁজ এক তরুণী। এ নিয়ে পুরো এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে দাফন করা ওই নারীর পরিচয় নিয়ে। ঘটনাটি ঘটেছে জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুণবতী ইউনিয়নের রাজবল্লভপুর গ্রামে।

ফিরে আসা নারীর নাম রোকসানা আক্তার (৩০)। রোকসানা ফিরে আসার পরই তাকে এক নজর দেখতে উৎসুক মানুষের ভিড় জমে গেছে।

মে মাসের শেষে রোকসানা আক্তার চৌদ্দগ্রামের নিজ বাড়ি থেকে ছোট ভাই সালাহ উদ্দিনের চট্টগ্রামের ষোলশহরের বাসায় বেড়াতে যান। গত পহেলা জুন ভোরে কাউকে না জানিয়ে ভাইয়ের বাসা থেকে বের হয়ে যান তিনি। এরপর আর খোঁজ মেলে না তার। গত কয়েকদিন আত্মীয়স্বজনসহ সব বিভিন্ন জায়গায় সন্ধান চালিয়েও তাকে পাওয়া যায় না।

এরি মধ্যে গত ১৭ জুন ঈদুল দিন বিকেলে ফেনী শহরের জিয়া মহিলা কলেজের সামনে ড্রেনে একজন অজ্ঞাত নারীর মরদেহ পড়ে থাকার খবর পাওয়া যায়। ওই শহরের একটি ভাড়া বাসায় থাকেন রোকসানার খালাতো বোন হাজেরা আক্তার ও খালাতো ভাই শাহজাহান। তারা দ্রুত সেখানে গিয়ে অজ্ঞাত মরদেহের চেহারার সঙ্গে রোকসানার সঙ্গে মিল খুঁজে পান। এরপর রোকসানার ভাই এবায়দুল হককে খবর পাঠানো হয়।

ফেনী শহরের পুলিশ ফাঁড়ি অজ্ঞাত মরদেহটি উদ্ধার করে সুরতহাল শেষে মর্গে পাঠিয়ে দেয়। এদিকে রাতেই ফেনীতে পৌঁছে যান রোকসানার ভাই এবায়দুল। তিনি জিয়া মহিলা কলেজের ড্রেন এলাকায় গিয়ে স্থানীয়দের রোকসানার ছবি দেখিয়ে ওই মরদেহ একই রকম কিনা জানতে চান। স্থানীয়রা জানান ছবির চেহারার সঙ্গে ওই মরদেহের মিল রয়েছে।

পরে এবায়দুল হকসহ তার পরিবার পুলিশের কাছে গিয়ে মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করে। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ এবায়দুল হকের কাছে ওই মরদেহ হস্তান্তর করা হয়।

অজ্ঞাত নারীর লাশ নিজের বোনের মনে করে তা নিয়ে গ্রামে ফিরে আসনে এবায়দুলসহ তার স্বজনরা। বিকেলে গুণবতী ইউনিয়নের রাজবল্লবপুর মধ্যমপাড়ায় সামিশকরা দিঘির দক্ষিণ পাড়ে তার দাফন করা হয়।

শোকের মাতম পড়ে পুরো রোকসানার পুরো পরিবারে। মৃত্যুর পর দোয়ার আনুষ্ঠানিকতা সারা হয়। এরি মধ্যে শোক স্তব্ধ পরিবারে আকস্মিকভাবে রোকসানার প্রত্যাবর্তনে রীতিমতো বিস্মিত হয়ে পড়েন সবাই।

গত বুধবার বিকেলে হঠাৎ বাড়িতে হাজির হন রোকসানা। ঘটনাটি জানাজানি হতেই স্বজন, পাড়া প্রতিবেশীসহ স্থানীয়রা ছুটে আসেন রোকসানাদের বাড়িতে। ভিড় সামলাতে হিমশিম অবস্থা দেখা দেয়।

রোকসানা আক্তার বলেন, কে বলেছে আমি মারা গেছি? আমি চাকরির খোঁজে ঢাকায় গিয়েছিলাম। শরীর খারাপ থাকায় কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি।

‘আমি চট্টগ্রাম ভাইয়ের বাসা থেকে কাউকে কিছু না বলে ঢাকায় চলে যাই। সেখানে গিয়ে আমি একটি চাকরি পেয়েছি। যেহেতু আমি বাড়ি থেকে কোনো কাপড়চোপড় নিয়ে যাইনি, তাই কাপড় নিয়ে যাওয়ার জন্য বাড়িতে ফিরে আসি,’ যোগ করেন তিনি।

রোকসানা আরও বলেন, বাড়িতে এসে দরজা নক করলে আত্মীয়স্বজনরা আমাকে দেখে হতবাক হয়েছেন। তখন আমি জানতে পারি, আমি নাকি মারা গেছি এবং আমার লাশও দাফন করা হয়ে গেছে। আমি তো জীবিত ফিরে আসলাম।

বুধবার বিকেলে রোকসানা ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই ফেনী মডেল থানায় গিয়ে পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে বলে জানান ভাই এবায়দুল হক। তিনি বলেন, ছবিতে মিল থাকায় নিজে বোনের মনে করে অজ্ঞাত ওই মরদেহটি দাফন করা হয়েছে।

অজ্ঞাত ওই মরদেহ উদ্ধার করা ফেনী শহর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক প্রতুল দাস বলেন, মরদেহটি বিকৃত অবস্থায় উদ্ধার করি। পরে ময়না তদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠাই। স্বজনরা মরদেহটি রোকসানার বলে শনাক্ত করে নিয়ে যায়।


একুশে সংবাদ/এ.ট.প্র/জাহা

Link copied!