গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ী ইউনিয়নের নলুয়া গ্রামে স্বর্গীয় হারাধন চন্দ্র হালদারের স্মৃতি চারণ উপলক্ষে নলুয়া স্কুল মাঠে চড়ক পূজা ও গ্রামীণ মেলার আয়োজন করা হয়েছে।
বুধ ও বৃহষ্পতিবার দুইদিন ব্যাপী মেলার আয়োজন করা হয়েছে। চড়ক পূজা ও গ্রামীণ মেলায় ছিল মানুষের উপচে পড়া ভিড়,পা ফেলার জায়গা ছিল না।
ঢাকঢোল বাজনার সঙ্গে উলুধ্বনি, সময়টা ছিল খুব ভালো। বুধবার সকাল থেকেই বাহারি সব দোকানপাট নিয়ে বসে রয়েছে দোকানদারগণ। বিকালে চড়ক ঘুরানো হয়। চড়ক ঘুরার পূর্বে গাছে পূজা করা হয়। এই পূজাকে বলা হয় চড়ক পূজা।
পূজার পর পরই দুই থেকে তিন জনকে বড়শি দিয়ে একই সাথে পিঠে গাঁথা হয়। এরপর তাদের গাছে চড়কের মাদ্যমে ঘুরানো হয়। চড়ক ঘুরা দেখার জন্য উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শনার্থীদের ভিড় জমে।
মেলা দেখতে আসা সুজন হাজরা বলেন, আমি এই মেলায় প্রতিবছর আসি। এবছর মেলা খুব ভালো জমেছে,গতকালকে ও আজকে চড়ক পূজা উপলক্ষে মেলা চলবে। আপনারা সবাই মেলায় আসবেন আনন্দ উপভোগ করবেন।
তেতুল বাড়ী থেকে চড়কপূজা ও মেলা দেখতে আসা সুমন হালদার বলেন, প্রতিবছর আমি এই মেলা দেখতে আসি, বিগত বছর থেকে এ বছর বেশি দর্শক উপস্থিত হয়েছে ,ধন্যবাদ দেই মেলার আয়োজকদের এমন সুন্দর একটা বিনোদন উপহার দেয়ার জন্য।
কুমুরিয়া থেকে বড়শি ঘুরানো দেখতে আসা লাবণ্য গাঙ্গুলী বলেন ,আমি এবছর প্রথম এই মেলায় আসছি আমার খুব ভালো লাগছে। আজকে মেলা শেষ হবে আগমী বছর আবারো মেলা দেখার অপেক্ষায় রইলাম।
চড়ক পূজার আয়োজক কমিটির সদস্য বিপুল কান্তি বিদ্যুৎ (মজুমদার) বলেন, নলুয়া হালদার ভবনের হারাধন সাধু এই চড়ক পূজা ও মেলা প্রচলন করে আসছেন। মেলা বৈশাখ মাসে হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু ধান কাটার কারণে একমাস পিছিয়ে জৈষ্ঠ্য মাসে অনুষ্ঠিত হলো। দির্ঘ ৫১ বছর ধরে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এই মেলায় হাজার হাজার দর্শকদের সমাগম ঘটে। যদি কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না ঘটে তাহলে প্রতিবছর চড়ক পূজা উপলক্ষে মেলা অনুষ্ঠিত হবে।
মেলা উপলক্ষে কলাবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান অ্যাড. বিজন বিশ্বাস বলেন, স্বর্গীয় হারাধন হালদার স্মৃতিচারণ উপলক্ষে এখানে চড়ক পূজা ও মানুষের পিঠে বড়শি গেঁথে ঘুরানো হয়। অনুষ্ঠানটি এখানে ৫১ বছর ধরে অনুষ্টিত হয়ে আসছে।
পিঠে বড়শি গেঁথে মানুষ কে ঘুরানো এটা একটা পুরানো প্রথা,এটা আমার কাছে অমানুবিক মনে হয়। এই পুরানো প্রথাকে পরিবর্তন করে ধর্মীয় নিয়ম নিতি মেনে আরো সুন্দর সুন্দর বিনোদন মানুষের মাঝে উপহার দেয়া যায়।
যা হোক সবকিছু মিলে এখানে হাজার হাজার লোক এসছে মেলা দেখতে। চড়ক পূজা উপলক্ষে মেলা গতকাল শুরু হয়েছে আজকে শেষ হবে।
একুশে সংবাদ/স.ব.প্র/জাহাঙ্গীর
আপনার মতামত লিখুন :