রাজধানীর মোহাম্মদপুরে মা ও মেয়েকে হত্যা করার ঘটনায় গৃহকর্মী আয়েশাকে দায়ী করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে এক ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃত আয়েশার বাড়ি নরসিংদীর সলিমগঞ্জে। তিনি স্বামী রাব্বী সিকদারকে নিয়ে সাভারের হেমায়েতপুরের পূর্বহাটিতে ভাড়া বাসায় থাকতেন। মোহাম্মদপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সহিদুল ওসমান মাসুম জানান, তাকে স্বামীর বাড়ি থেকেই আটক করা হয়েছে।
তেজগাঁও বিভাগের মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ ও প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের ভিত্তিতে একাধিক টিম তদন্ত চালাচ্ছিল। প্রথমে আয়েশার বর্তমান বাসা শনাক্ত করা হয়। এরপর তার মায়ের মাধ্যমে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে নিশ্চিত হওয়া যায় যে, তিনি ঝালকাঠির নলছিটি এলাকায় লুকিয়ে আছেন। পরে সেখানে অভিযান চালিয়ে আয়েশাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার স্বামী রাব্বীকেও হেফাজতে নেয় পুলিশ।
সোমবার সকালে মোহাম্মদপুরের শাহজাহান রোডের একটি ১৪ তলা ভবনের সপ্তম তলায় লায়লা আফরোজ (৪৮) এবং তার মেয়ে নাফিসা লাওয়াল বিনতে আজিজ (১৫)-এর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নাফিসা নবম শ্রেণিতে পড়ত মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুলে।
এ ঘটনায় লায়লা আফরোজের স্বামী আ জ ম আজিজুল ইসলাম একই দিন রাতে মোহাম্মদপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় তিনি সিসিটিভি ফুটেজের তথ্য তুলে ধরে জানান, সকাল ৭টা ৫১ মিনিটে আয়েশা বাসায় প্রবেশ করে এবং ৯টা ৩৫ মিনিটে তার মেয়ের স্কুলড্রেস পরে বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। যাওয়ার সময় মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, স্বর্ণালংকার, নগদ অর্থসহ মূল্যবান সামগ্রী নিয়ে পালিয়ে যায়।
আজিজুল ইসলাম পেশায় স্কুলশিক্ষক। ঘটনার চার দিন আগে তিনি আয়েশাকে খণ্ডকালীন গৃহকর্মী হিসেবে নিয়োগ দেন। সোমবার সকাল ৭টার দিকে তিনি কর্মস্থল উত্তরা চলে যান। পরে স্ত্রীর মোবাইলে বারবার কল করেও যোগাযোগ না পেয়ে তিনি বাসায় ফিরে আসেন সকাল ১১টার দিকে। এসে দেখেন, মেয়ের গলার নিচে গভীর ক্ষত—গুরুতর অবস্থায় প্রধান দরজার পাশে পড়ে আছে। প্রতিবেশী পরিচ্ছন্নতাকর্মী আশিককে দিয়ে মেয়েকে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়, যেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
অন্যদিকে স্ত্রী লায়লা আফরোজ রক্তাক্ত অবস্থায় রান্নাঘরের পাশের করিডোরে পড়ে ছিলেন। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল।
একুশে সংবাদ/এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

