AB Bank
  • ঢাকা
  • সোমবার, ২৫ আগস্ট, ২০২৫, ১০ ভাদ্র ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

অরক্ষিত ক্যাম্পাসে অবাধে বসছে মাদকের আড্ডা



অরক্ষিত ক্যাম্পাসে অবাধে বসছে মাদকের আড্ডা

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ক্যাম্পাস ক্রমেই হয়ে উঠছে অনিরাপদ ও অরক্ষিত। ক্যাম্পাসে অবাধে বহিরাগতদের প্রবেশ, মাদকের আসর চলছে হর-হামেশায়। এছাড়া সর্বশেষ শ্বাস রোধে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু ঘিরে আতঙ্কে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাহীনতা দিন দিন প্রকট হয়ে উঠলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। মাদক ও বহিরাগতদের প্রবেশে ‘জিরো টলারেন্স’ জারি থাকলেও বাস্তবে সেটি কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব পরিচয়পত্র সরবরাহে অবহেলা, ক্যাম্পাস অভ্যন্তরে সিসিটিভি ক্যামেরা সংকট, পর্যাপ্ত লাইটিংয়ের অভাব এবং ভাঙ্গা সীমানা প্রাচীরের কারণে রাত-বিরাতে ক্যাম্পাসে বহিরাগত ও মাদক কারবারিরা প্রবেশ করছে বিনা বাধায়। শিক্ষার্থী মৃত্যুর পর আন্দোলনে ক্যাম্পাসে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা ও লাইটিং স্থাপনের দাবি তোলে শিক্ষার্থীরা। এর প্রেক্ষিতে প্রশাসন ক্যাম্পাসের কয়েকটি পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা ও লাইটের ব্যবস্থা করলেও তা পর্যাপ্ত নয়, দাবি শিক্ষার্থীদের। ফলে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা শঙ্কা দিন দিন বাড়ছে। শিক্ষার্থীরা আশঙ্কা করছেন, প্রশাসনের এমন গাফিলতি ও ধীরগতির কার্যক্রমে নিকট ভবিষ্যতে শিক্ষার্থীরা অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার মুখোমুখি হবে। প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছেন বলে অভিযোগ তাদের।

মাদক কারবারিতে জড়িত কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হয় প্রতিবেদকের। নাম না প্রকাশ করার শর্তে তারা জানান, মাদকসেবী শিক্ষার্থীরা ‘অন কল ফোনে’র মাধ্যমে চাওয়া মাত্রই হাতের নাগালে পাচ্ছেন বিভিন্ন মাদকদ্রব্য। এরমধ্যে সবচেয়ে গাঁজা ও ইয়াবায় বেশি আসক্ত হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। এছাড়া সিসা, হিরোইন, ফেনসিডিলসহ নানা ধরনের ভারতীয় মাদক মেলে অন কল সেবায়। জানা যায়, সন্ধ্যার পর ও গভীর রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন জায়গায় নিয়মিত বসছে মাদকের আসর। এমনকি হলগুলোর ছাদেও মাঝেমধ্যে মাদকের আসর বসায় মাদকসেবী শিক্ষার্থীরা। জুলাই অভ্যুত্থানের পর ক্যাম্পাসে মাদক কারবারিদের আনাগোনা কমলেও পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।

মাদক সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ক্যাম্পাসসংলগ্ন পান্টি বাজার, শেখপাড়া বাজার ও বসন্তপুর এলাকা থেকে মাদক কারবারিরা সরবরাহ করেন। এমনকি প্রধান ফটকসংলগ্ন কয়েকটি দোকান থেকেও মাদক বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন চিহ্নিত পুরোনো দোকানদার ও ভ্যানচালক মাদক কারবারের সঙ্গে সরাসরি জড়িত। তাদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হাতে মাদক পৌঁছে নিরাপদে। শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হল পকেট গেট ও ইবি থানা সংলগ্ন অস্থায়ী বসতিগুলো থেকে মাদক বিক্রি হচ্ছে। নারী মাদককারবারিদের মাধ্যমে দর্শনা, চুয়াডাঙ্গা ও মোবারকগঞ্জ হতে এ মাদক ও মদের চালান আসে।

মাদকসেবীদের তথ্য মতে, সন্ধ্যার পর থেকে ও রাতের বিভিন্ন অংশে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিকেট মাঠ, ফুটবল মাঠ, মীর মুগ্ধ সরোবর লেকসহ বিভিন্ন স্থানে জমে ওঠে মাদকের আড্ডা। এমনকি দিনেও ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও বহিরাগতরা শিক্ষার্থীদের আসকারায় মাদকের আসর বসান। এছাড়াও নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থে মাদকসেবী শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস এলাকার বাইরে গিয়েও বিভিন্ন মেসে মাদক সেবন করছেন।

সরেজমিনে ঘুরে এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বাইরের স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ছেলেমেয়েরা ক্যাম্পাসে এসে অবাধে মেলামেশায় লিপ্ত হচ্ছে। বিশেষ করে ছুটির দিনগুলোতে বহিরাগত শিক্ষার্থীরা জোড়ায় জোড়ায় ক্যাম্পাসের মফিজ লেক, শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধ, মুক্ত বাংলা, বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনের উপরে ও জিমনেসিয়ামের পিছুনে অবাধে মেলামেশায় লিপ্ত হচ্ছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক সিনিয়র শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ক্লাস-পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় পরিবারকে সময় দেওয়া হয়না। ছুটির দিনগুলতে স্ত্রী-সন্তানদেরকে নিয়ে ক্যাম্পাসে ঘুরতে বের হয়েও বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখামুখি হতে হয়। বিশেষ করে বাইরে থেকে আসা ছেলেমেয়েরা ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট করছে।

আল-ফিকহ্ এন্ড ল’ বিভাগের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনও সকল শিক্ষার্থীকে সেন্ট্রাল আইডি কার্ডের আওতায় আনতে পারেনি। অবাধে বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে প্রবেশ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। প্রশাসনের সদিচ্ছার অবাধে শিক্ষার্থীদের আজও নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত হতে হয়। তাদেরকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ভাবা উচিত।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান বলেন, বহিরাগত প্রবেশ ঠেকাতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। এছাড়া শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে বিভিন্ন পয়েন্টে ক্যামেরা লাগানো হয়েছে, বাকি জায়গাগুলোতেও ক্যামেরা লাগানো হবে। মাদকের বিষয়ে আমরা কাজ করছি। আমাদের কাছে অভিযোগ আছে এবং আমরা রাতে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। স্পেসিফিক অভিযোগ পেলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই অ্যাকশনে যাবো। সীমানা প্রাচীর ঘেঁষে অস্থায়ী বসতি উচ্ছেদে পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি।

 

একুশে সংবাদ/এ.জে

সর্বোচ্চ পঠিত - ক্যাম্পাস

Link copied!