পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে সিনিয়র ও জুনিয়র দুই শিক্ষার্থীর মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।
রবিবার (২৯ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ওই সিনিয়র শিক্ষার্থী ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের রাকিবুল ইসলাম এবং জুনিয়র শিক্ষার্থী গণিত বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের আব্রাম আহমেদ। তারা একটি বৈদ্যুতিক বাল্বকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বে জড়ান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থীই মেরিল বাইপাস সংলগ্ন একটি মেসে প্রায় এক বছর ধরে রুমমেট ছিলেন। সিনিয়র শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম মেস ছেড়ে আসার পর মেসের রুমের একটি বাল্ব নিয়ে আসেন। মূলত এই বাল্বটি রুমের সবাই মিলে কিনেছিলেন এবং এটা নিয়েই দু’জনের মাঝে দ্বন্দ্বের সূচনা হয়।
অভিযুক্ত সিনিয়র শিক্ষার্থী রাকিবুল ইসলাম বলেন, রুমে বাংলা বিভাগের এক জুনিয়র থাকত। তাকে জানিয়ে আমি বাল্বটি রুম থেকে খুলে নিয়ে আসি। রাতের দিকে আব্রাম আমাকে ফোন দিয়ে বাল্বটি কেন নিয়ে এসেছি সে বিষয়ে জানতে চায় এবং আমাকে বলে, ‘আপনি আমার সাথে কথা না বলেই কার পরামর্শে রুম থেকে বাল্ব নিয়ে গেছেন? আমি কালকে প্রক্টর স্যার বরাবর অভিযোগ দিব আপনি রুম থেকে আমার পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে গেছেন।’ কথা বলার একপর্যায়ে আমি বাল্বটি কেনায় ওর ভাগের টাকা দিতে চেয়ে আজকে আসতে বলি। আজকে আব্রাম আসার পর গতদিন সে আমার সাথে ফোনে বাজে ব্যাবহার করার জন্য তাকে আমি শাসন করি। এরপর সে তার বন্ধুদের নিয়ে আমার ওপর চড়াও হয়। পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ ও ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের সিনিয়র ভাইরা আমাদের দুইজনকে নিয়ে মীমাংসা করে দেন। কিন্তু সবকিছু মীমাংসা হওয়ার পর সে পুনরায় আমাকে লাথি মারে। ফলে একপর্যায়ে মারামারির ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত অন্য শিক্ষার্থী আব্রাম আহমেদ বলেন, আমরা এক রুমেই থাকতাম। মাসের শেষের দিকে রাকিব ভাই আমাদের না বলেই বাল্বটি নিয়ে যান, আর মাসের শেষের দিকে আমার কাছে টাকাও তেমন থাকে না। তাই আমি ভাইকে ফোন দিয়ে কেন আামাদের না বলে বাল্ব নিয়ে গেছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে ভাই আমার উপর মেজাজ দেখায় এবং একপর্যায়ে আমার মাকে নিয়ে গালি দেয়। আজকে ভাই বাল্বের টাকার বিষয়ে দেখা করতে বলে। দেখা হলে আমাদের মাঝে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আমাকে একটা থাপ্পর দেয়। উনি আমার মাকে নিয়ে গালি দেওয়াতে আমার প্রচণ্ড রাগ হয়েছিল তাই আমি নিজেকে কন্ট্রোল না করতে পেরে ভাইকে একটা লাথি মেরে বসি।
ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির পক্ষ থেকে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। প্রক্টর অফিসে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থী এবং তাদের বিভাগের শিক্ষকদের উপস্থিততে পরবর্তীতে এমন কাজে কখনও জড়াবে না এই শর্তে মীমাংসা করে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে সহকারী প্রক্টর সাইমুন্নাহার ঋতু বলেন, তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আজকে দুই শিক্ষার্থীর মারামারি খুবই দুঃখজনক। মারামারির খবর পেয়ে আমরা সাথেসাথেই ঘটনাস্থলে যাই এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সক্ষম হই। আমরা দুই শিক্ষার্থীসহ তাদের বিভাগের দু’জন শিক্ষককে নিয়ে বিষয়টি প্রক্টর অফিসে বসে মীমাংসা করে দেই। আশা করছি তারা ফের এমন ঘটনা ঘটাবে না। তবে ফের এমন ঘটনা ঘটলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একুশে সংবাদ/এ.জে