AB Bank
  • ঢাকা
  • বুধবার, ১৮ জুন, ২০২৫, ৪ আষাঢ় ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

বিশ্ববিদ্যালয়ের অলিখিত পাঠ্যক্রম: ক্যান্টিনের আড্ডা


Ekushey Sangbad
ডিআইইউ প্রতিনিধি
১১:০৩ এএম, ১৮ জুন, ২০২৫

বিশ্ববিদ্যালয়ের অলিখিত পাঠ্যক্রম: ক্যান্টিনের আড্ডা

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন মানেই শুধু ক্লাস, পরীক্ষা আর সনদ অর্জন নয়। এর বাইরেও আছে বন্ধুত্ব, আবেগ, আনন্দ আর অজস্র স্মৃতির সঞ্চার। আর এই স্মৃতির অন্যতম বড় অংশ হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিন। যেখানে এক কাপ চা, দুইটা সিঙ্গারা আর বন্ধুদের প্রাণখোলা আড্ডা মিলে তৈরি হয় জীবনের অমূল্য গল্পগুলো। ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যান্টিনের আড্ডা নিয়ে তুলে ধরেছেন তাদের সুন্দর অনুভূতি ও অভিজ্ঞতা - মোঃ আল শাহারিয়া সুইট।

“বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুম আর ক্যান্টিনের এই স্মৃতিগুলো আজীবনের সঙ্গী হয়ে থাকবে” 

প্রতিটি শিক্ষার্থীর জীবনে একটি বিশ্ববিদ্যালয় শুধু শিক্ষার কেন্দ্র নয়, বরং তা হয়ে ওঠে স্মৃতি, অনুভূতি, সম্পর্ক ও পরিচয়ের অন্যতম মাধ্যম। আমার জন্য, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি তেমনই এক জায়গা যেখানে আমি প্রতিদিন শেখার পাশাপাশি আবিষ্কার করি নিজেকে। আর এই আবিষ্কারের সঙ্গী হয় যে জায়গাটি, সেটি হল আমাদের প্রিয় ক্যান্টিন। বিশ্ববিদ্যালয় এবং ক্যান্টিন এই দুটি জায়গা মিলেই আমার ছাত্র জীবনের গল্প রচনা করেছে প্রতিদিন।

ডিআইইউতে ভর্তি হওয়ার পর জীবনের এক নতুন অধ্যায় শুরু হয়। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা, গঠনমূলক শিক্ষা পদ্ধতি, আন্তরিক শিক্ষকবৃন্দ ও প্রাণবন্ত ক্যাম্পাস আমাকে ঘরের মতো পরিবেশ দিয়েছে। সহশিক্ষা কার্যক্রম, সেমিনার, ওয়ার্কশপ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলো আমাকে গড়ে তুলেছে একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে। তবে এইসব কিছুর মাঝেই ক্যান্টিন আমাকে দিয়েছে একটু স্বস্তি, মনের কথা উজাড় করে বলার সুযোগ।

ক্লাস শেষে আমরা সবাই মিলে আড্ডা দিই। কেউ আনে কৌতুক, কেউ রাজনীতি, কেউবা ব্যক্তিগত অনুভূতি। চায়ের কাপ হাতে কখনো আমরা হাসি, বিষণ্ন হই, আবার কখনো তর্কে জড়াই। এ আড্ডায় তৈরি হয় বন্ধুত্বের গভীর বন্ধন।

আমার প্রিয় মুহূর্তের মধ্যে একটি ছিল বন্ধুর জন্মদিনের ক্যান্টিন উদযাপন। কেক, গান আর হাসির মিলনে সেই দিনটি রঙিন হয়ে উঠেছিল। ক্যান্টিনের আড্ডা শুধু বিনোদনের জায়গা নয় সিনিয়রদের কাছ থেকে পাওয়া পরামর্শ, পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের আলোচনা এসবই অনেক মূল্যবান শিক্ষার অংশ হয়েছে আমার জন্য।

ডিআইইউ আমাকে শিখিয়েছে কীভাবে ভিন্ন পটভূমির মানুষের সাথে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুম আর ক্যান্টিনের এই স্মৃতিগুলো আজীবনের সঙ্গী হয়ে থাকবে।

_তৃষ্ণা তৃষা,রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

“ক্যান্টিনের প্রতিটি আড্ডা আমাদের বন্ধুত্বের মিষ্টি দায়িত্ব বহন করে”

In our canteen, we do not count calories, we count memories.

ভার্সিটির ক্যান্টিন মানে শুধু খাবারের জায়গা নয়। এটি এক টুকরো আপন ভুবন, যেখানে প্রতিদিন জমে ওঠে গল্প, হাসির রোল, আর অসংখ্য মধুর স্মৃতি। আমাদের পুরনো সাদা ভবনের নিচতলায় অবস্থিত ক্যান্টিনটির চারপাশের খোলামেলা পরিবেশ এক বিশেষ সজীবতা যোগ করেছে।

বৃষ্টির দিনে চায়ের কাপ হাতে বসে বৃষ্টি বিলাস আর গরম সিঙ্গারার স্বাদ যেন অন্য রকম অনুভব এনে দেয়। সিঙ্গারার সেই ভাগাভাগি করা আনন্দ ক্যান্টিনের আড্ডাকে আরও মধুর করে তোলে।

ক্লাস, রাজনীতি, রাষ্ট্র ও সাম্প্রতিক নানা বিষয়ে প্রাণবন্ত আলোচনা চলে এখানে। ক্লাবের মিটিং, নতুন আয়োজনের পরিকল্পনা, উদ্যোগ বাস্তবায়নের আলাপ সবই হয় এই ক্যান্টিনে। এখানেই তৈরি হয় বন্ধুত্বের সুতোয় গাঁথা মুহূর্তগুলো।

প্রখ্যাত লেখক খলিল জিব্রানের ভাষায় বলতে হয় “Friendship is always a sweet responsibility, never an opportunity.” ক্যান্টিনের প্রতিটি আড্ডা আমাদের বন্ধুত্বের মিষ্টি দায়িত্ব বহন করে। ক্যান্টিনে কাটানো প্রতিটি মুহূর্ত আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের অমূল্য সম্পদ হয়ে থেকে যাবে।

_মাহমুদুল হাসান মুন্না, রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি 

“বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের এই ক্যান্টিনের আড্ডা এটি সত্যিকার অর্থেই এক সোনালি অধ্যায়” 

সেমিস্টার ফাইনাল শেষ। বেশ কিছুদিন ধরে বাসায় আছি, কিন্তু মনটা পড়ে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যান্টিনের আড্ডায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছে অথচ ক্যান্টিনে আড্ডা দেয়নি এমন মানুষ পাওয়া কঠিন।

ক্লাস শেষ হলে ক্যান্টিনে এসে মনে হয়, এখানেই বোধহয় বিশ্ববিদ্যালয়ের হৃদস্পন্দন। বন্ধুদের হাসি, প্রেমিক-প্রেমিকাদের আড্ডা, সিনিয়র জুনিয়রের কথোপকথন সবকিছু মিলেই এক অপূর্ব দৃশ্য। শিক্ষকদের সঙ্গেও যদি কখনো আড্ডা জমে, সেটাই হয়ে ওঠে মেমোরির এলবামের সেরা ফ্রেম।

তোমার বাড়ির রঙের মেলায় দেখেছিলাম বায়োস্কোপ

এই গান বাজলে তো আড্ডা আরও জমে ওঠে। সেদিন একদল বড় ভাই গিটার নিয়ে কী সুন্দর গান করছিলেন, আমি মুগ্ধ হয়ে দেখছিলাম।

তবে কখনো কখনো ক্যান্টিনে সময় না দিতে পারার কিছু অজুহাত থাকে টিউশনি, প্রেমিক প্রেমিকার ফোন, বাসার দূরত্ব। যদিও এসব বুঝি, কিন্তু বুঝতে দিই না। সময় তো আর ফিরে আসে না।

সমরেশ মজুমদার স্যারের কথায় বলতে চাই:

"আমি টাকা জমাচ্ছি। যেদিন অনেক টাকা হবে, সময় কেনার মতো টাকা, সেদিন কিছু সময় কিনে নেবো।"

এই যে সুন্দর সময়গুলো একদিন হারিয়ে যাবে। যেমন একদিন দেখলাম এক বড় ভাই চুপচাপ চা খাচ্ছেন, চোখে জল। জানালেন তিনি ১০ বছর আগে ডিআইইউ থেকে পাস করেছেন। আজ এসে স্মৃতিচারণ করতে করতে চোখ ভিজে উঠেছে তাঁর।

আমার জুনিয়রদের বলবো, যতটুকু সময় পাবে, ক্যান্টিনে আড্ডা দিয়ো। এগুলো জীবনের অমূল্য স্মৃতি হয়ে থাকবে। ছবি তুলে রাখো, স্মৃতি ধরে রাখো।

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের এই ক্যান্টিনের আড্ডা এটি সত্যিকার অর্থেই এক সোনালি অধ্যায়।

_মোঃ সিদরাতুল মুনতাহা রাকিন , অর্থনীতি বিভাগ

ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

বিশ্ববিদ্যালয় জীবন মানেই শুধু পড়াশোনা নয় এটি এক বিশাল অনুভবের জগৎ। ক্যাম্পাসের ক্যান্টিন সেই অনুভবের অন্যতম কেন্দ্রস্থল। এখানে প্রতিটি আড্ডা, প্রতিটি হাসি আর প্রতিটি আলোচনার মধ্যেই তৈরি হয় আজীবনের সম্পর্ক আর স্মৃতি। এসব স্মৃতি একদিন হয়তো শুধুই ছবি হয়ে থাকবে, কিন্তু তার আবেগ কখনো মুছে যাবে না

 

একুশে সংবাদ/এ.জে

Link copied!