AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

জাবিতে ধর্ষণ চেষ্টা, আটক ২


জাবিতে ধর্ষণ চেষ্টা, আটক ২

মধ্যরাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে বহিরাগত দুই যুবককে আটকে মারধরের পর পুলিশে দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

 

সোমবার (১৫ মে) রাত সাড়ে ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংলগ্ন ইসলামনগর এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটেছে।

 

অভিযুক্তরা হলেন মো. রাকিব হোসেন ও মেজবাহ উদ্দিন। এদের মধ্যে অভিযুক্ত রাকিবের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালীতে এবং বর্তমানে তিনি মিরপুর পল্লবীতে একটি ভাড়া বাসায় থাকেন।

 

অপর অভিযুক্ত মেজবাহ থাকেন রাজধানীর বারিধারা এলাকায়। এ ঘটনায় ঢাকার আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী। ভুক্তভোগী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

 

ভুক্তভোগী ও অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ৪২ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী মিশুর পরিচিত ওই দুই অভিযুক্ত। তাঁরা গত শনিবার ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসেন। ক্যাম্পাসে ঘোরাঘুরির সময় মিশুর মাধ্যমে ওই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সঙ্গে অভিযুক্তদের পরিচয় হয় এবং তাঁরা একসঙ্গে ক্যাম্পাসে আড্ডা দেন। পরে রাতে মিশুসহ অভিযুক্ত ওই দুইজন ভুক্তভোগীর ভাড়া বাসায় রাত্রিযাপন করেন। পরদিন রোববার মিশু চাকরির কাজে ঢাকা চলে গেলেও ক্যাম্পাসে থাকেন ওই দুই অভিযুক্ত এবং ক্যাম্পাসে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সঙ্গে ঘোরাঘুরি করেন। পরে রাতের খাবার ও রাত্রিযাপনের জন্য ইসলামনগরের ভাড়া বাসায় ওই দুই অভিযুক্তদের নিয়ে যান। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়লে অভিযুক্ত মেজবাজ উদ্দিনের সহায়তায় অভিযুক্ত রাকিব ভুক্তভোগীকে ঘুমের মধ্যে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। ভুক্তভোগী জেগে উঠে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের মুঠোফোনে বিষয়টি জানালে তাঁরা গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন এবং অভিযুক্তদের ক্যাম্পাসে নিয়ে আসেন। পরে সহকারী প্রক্টরের উপস্থিতে আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে তাঁদেরকে হস্তান্তর করা হয়।

 

ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী বলেন, আমি একা থাকতে ভয় পাই। ক্যাম্পাসে তো একটা বাসা নিলে অনেকেই আসে। মিশু ভাই আমার পরিচিত ও অভিযুক্তদের সঙ্গে আমার সখ্যতা হওয়ায় আমার বাসায় থাকার জায়গা দেই। পরদিন রোববার রাতেও তাঁরা আমার বাসায় যান এবং রাতের খাবারের জন্য রান্না করি। পরে আমি অসুস্থ অনুভব করায় গেস্টরুমে ঘুমিয়ে যাই। হঠাৎ ঘুম ভেঙে দেখি অভিযুক্ত রাকিবের জামা-কাপড় খোলা এবং আমার উপর ঝাপিয়ে পড়ে আমার ধর্ষণের চেষ্টা করছে। আমি তখন দৌড়ে আমার বেডরুমে গিয়ে দেখি মেজবাহ বসে আছে এবং সে আমাকে দেখে চমকে উঠে। পরে আমি সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের বাসা থেকে বের হয়ে যেতে বলি এবং ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের কাছে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানাই।

 

ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগের কথা স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত রাকিব হোসেন। তিনি বলেন, ভুক্তভোগী ঘুমাচ্ছিলেন। এ সময় আমি তাঁর শরীরে হাত দিই। আমার উদ্দেশ্য খুব খারাপ ছিল। আমি দরজা বন্ধ করে তাঁকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করেছি।

 

তবে অপর অভিযুক্ত মেজবাহ এ ঘটনায় জড়িত না বলে জানান। তিনি বলেন, ভুক্তভোগী বিছানায় ঘুমাচ্ছিলেন আর রাকিব আধা শোয়া অবস্থায় ছিলেন। আমার ক্ষুধা লাগায় খাবার খেতে ডিম ভাজতে যাই। ডিম ভেজে ফিরে দরজা বন্ধ দেখতে পাই। দরজা বন্ধ পেয়ে আমি চিন্তিত হয়ে যাই ও পাশের রুমে গিয়ে বসি। এ সময় ভুক্তভোগী চিৎকার করতে করতে রুমের বাইরে বেরিয়ে আসে। কারণ জানতে চাইলে তিনি রাকিবের কাছে জানতে বলেন।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মিশু বলেন, মেজবাহ আমার কলেজের বন্ধু। রাকিব তাঁর বন্ধু। তাঁরা ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসে ও ভুক্তভোগীর সঙ্গে পরিচিত হয়। শনিবার রাতে তাঁরা ভুক্তভোগীর বাসায় অবস্থান করতে গেলে আমাকেও সেখানে যেতে বলে ভুক্তভোগী। দুজন নতুন অতিথি তাঁর বাসায় অবস্থান করছে কি না কি হয় এই ভেবে আমিও সেই রাতে ভুক্তভোগীর বাসায় অবস্থান করি। পরদিন সকালে আমি অফিস করতে চলে আসি। তবে তাঁরা যে পুনরায় ভুক্তভোগীর বাসায় অবস্থান করতে গেছে এটি আমি জানতাম না। আজকের ঘটনায় আমার কোনো দায় নেই।

 

ওই দুই অভিযুক্তকে আটক করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন চত্বর এলাকায় নিয়ে আসে শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা কর্মকর্তা, প্রক্টর ও ৯৯৯ এ কল করে থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে তাঁরা ছুটে আসেন ও অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

 

বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখার প্রধান (ডেপুটি রেজিস্ট্রার) সুদীপ্ত শাহীন বলেন, ঘটনাটি ঘটেছে ইসলামনগর এলাকায় একটি বাসায়। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন এলাকার বাইরে। তাই ঘটনাটি সস্পর্কে কিছু বলব না।

 

ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা অভিযুক্তদের ক্যাম্পাসে নিয়ে আসার পর রাত আড়াইটায় সেখানে উপস্থিত হন সহকারী প্রক্টর মহিবুর রৌফ। তিনি বলেন, ঘটনার খবর শুনতে পেয়ে আমি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তাকর্মীরা ঘটনাস্থলে যাই। পরে অভিযুক্তদের পুলিশের হাতে তুলে দিই। পুলিশ অভিযোগের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেবে।

 

আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক সোহেল রানা খন্দকার বলেন, জরুরি পুলিশ সেবা ৯৯৯ এ কল দিয়ে শিক্ষার্থীরা ঘটনাটি আমাদেরকে জানিয়েছেন। আমরা এসেছিলাম তাঁদেরকে থানায় নিয়ে যাচ্ছি। ভুক্তভোগীর অভিযোগ ও তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

একুশে সংবাদ/এসএপি
 

Link copied!