চলতি বিপিএলে রীতিমতো উড়ছে রংপুর রাইডার্স। ঢাকা পর্বে হ্যাটট্রিক জয়ের স্বাদ নিয়ে সিলেট পর্বে মাঠে নেমেছিল রংপুর। যেখানে স্বাগতিক সিলেটকে ৮ উইকেটে হারিয়ে আসরে টানা চতুর্থ জয় তুলে নিয়েছে সোহানের দল। এতে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষস্থানটা আরও মজবুত করল রংপুর।
সোমবার (৬ জানুয়ারি) বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) সিলেট পর্বের উদ্বোধনী ম্যাচে টসে জেতা রংপুর আগে ফিল্ডিং বেছে নেয়। ওপেনার রনি তালুকদার ও টপ অর্ডারে নেমে জাকিরা হাসানের ফিফটিতে বড় স্কোরের ভিত্তি পেয়েছিল সিলেট স্ট্রাইকার্স। শেষ দিকে অ্যারন জোন্স ও জাকের আলী অনিকের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে ৪ উইকেটে ২০৫ রানের সুরমা পাড়ের দলটি বড় স্কোর পায়। জবাবে রংপুর এক ওভার হাতে রেখে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে জয় নিশ্চিত করে।
চার ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে সবার উপরে অপরাজিত থাকা রংপুর। দুই খেলায় ৪ পয়েন্ট নিয়ে দুই নম্বরে খুলনা টাইগার্স। রানরেটের পার্থক্যে ২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে যথাক্রমে চিটাগং কিংস, ফরচুন বরিশাল ও দুর্বার রাজশাহী। দুই ম্যাচ খেলে জয়ের দেখা না পাওয়া সিলেট ষষ্ঠ ও তিন ম্যাচে জয়হীন ঢাকা ক্যাপিটালস তলানিতে রয়েছে।
লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ওভারেই আজিজুল হাকিম তামিমের উইকেট হারায় রংপুর। তানজিম হাসান সাকিবের অফস্টাম্প তাক করা বলটি ব্যাকফুটে গিয়ে খেলতে দেরি করায় তানজিমের দিকেই ক্যাচ তুলে দেন তামিম। ক্যাচটি সহজেই লুফে নেন বোলার। শুরুতে উইকেট হারালেও ইনফর্ম সাইফ হাসান ও অ্যালেক্স হেলসের ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় রংপুর। পাওয়ার প্লেতে দলটি করে এক উইকেটে ৫৪ রান।
সাইফ হাসান ৩১ বলে হাফ সেঞ্চুরির দেখা পান। হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন হেলসও, তিনিও ৩১ বলে এই কীর্তি গড়েন। দ্বিতীয় উইকেটে এই দুই ব্যাটার ১৮৬ রানের জুটি গড়ে সিলেটের জয়ের সব আশা শেষ করে দেন। বিপিএলের ইতিহাসে এটি চতুর্থ সর্বাধিক রানের জুটি।
সাইফ ও হেলস দুজনই সেঞ্চুরির দিকে দারুণভাবে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। সাইফ ৪৯ বলে ৩ চার ও ৭ ছক্কায় ৮০ রানের ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন। উড়িয়ে মারতে গিয়ে উয়ানজিম সাকিবের বলে আরিফুল হকের তালুবন্দি হন।হেলসকে অবশ্য থামানো যায়নি। ইংলিশ ওপেনার ৫৬ বলে ১০ চার ও ৭ ছক্কায় ১১৩ রানে অপরাজিত থাকেন। শেষ দিকে তাকে সঙ্গ দেন ৮ রান করা ইফতিখার আহমেদ।
এর আগে ব্যাটিংয়ে শুরু থেকেই আগ্রাসী ভঙ্গিতে খেলতে থাকে সিলেট। ঘরের মাঠে চার-ছক্কায় ব্যাটারদের বিনোদন দিতে থাকে। মাত্র পাঁচ ওভারেই দলের রান ৪৭-এ পৌঁছে দেন সিলেটের দুই ওপেনার জর্জ মুন্সে এবং রনি তালুকদার।
পঞ্চম ওভারের শেষ বলে আকিফ জাভেদের স্লোয়ার বুঝতে পারেননি মানজি। স্কটল্যান্ডের এই ওপেনার ডিপ স্কয়ার লেগে ক্যাচ তুলে দেন, যা লুফে নেন আজিজুল হাকিম তামিম। ওপেনিং জুটিতে আসে ৪৭ রান। পাওয়ার প্লেতে সিলেট তোলে এক উইকেটে ৫৫ রান।
দারুণ ব্যাটিংয়ে হাফ সেঞ্চুরিও তুলে নেন রনি। ৩০ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন এই ওপেনার। শেখ মেহেদীর বলে লেগ বিফোর উইকেটের শিকার হন। ৩২ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৫৪ রান করেন রনি। ৮৮ রানে দ্বিতীয় উইকেট হারায় সিলেট।তারপর জাকির হাসানের সঙ্গে তাল দিয়ে ব্যাট চালাতে থাকেন পল স্টার্লিং। যদিও সেভাবে সুবিধা করতে পারেননি তিনি। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের ফুল লেংথের বলে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দেন এই আইরিশ ব্যাটার। তার ব্যাটে এসেছে ১৬ বলে ১৬ রান। ব্যক্তিগত ১১ রানে থাকা অবস্থায় রান আউট থেকে বাঁচলেও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি। ১২৪ রানে তৃতীয় উইকেট হারায় সিলেট।
স্টার্লিং বিদায় নিলেও রানের চাকা সচল রাখেন জাকির। তার সঙ্গে হাত খুলে খেলতে থাকেন দলটির আমেরিকান ক্রিকেটার অ্যারন জোন্স। ৩৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি পান জাকির। ৪টি ছক্কায় হাফ সেঞ্চুরি হাঁকানো জাকির ৩৮ বলে ৫০ রান করে সাইফউদ্দিনের ডেলিভারিতে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান।
জাকির ফিরলেও জাকের আলী অনিকের ৫ বলে তিনটি ছক্কায় ২০ রানের ক্যামিওতে দুইশ রান পার করে সিলেট। সঙ্গে ১৯ বলে ৩৮ রানে অপরাজিত ছিলেন জোন্স। রংপুরের হয়ে ৩১ রান খরচায় দুই উইকেট নেন সাইফউদ্দিন।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :