ব্রেইন স্ট্রোক করে এক হাত এবং এক পা অচল হয়ে যাওয়া মালদ্বীপ প্রবাসী বাংলাদেশি তৈয়ব উদ্দিন (৫৪) দেশটির ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালে গত ১০দিন যাবত চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন।এমতাবস্থায় তার উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশে পাঠাতে আর্থিক সহায়তার প্রয়োজন।এজন্য প্রবাসীসহ দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশন ও দেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আর্থিক সহায়তা চেয়েছেন তিনি ও তার স্বজনরা।
তৈয়ব উদ্দিন নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার তুলাতুলি গ্রামের মরহুম আবদুস সুবহানের পুত্র।তিনি পাঁচ বছর আগে ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় অন্য হাজারো প্রবাসীদের মতো দক্ষিণ এশিয়ার পর্যটননগরীর দেশ মালদ্বীপে পাড়িজমিয়েছেন।
প্রবাস জীবনের প্রথমে কিছুদিন বৈধভাবে কাজ করলেও দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবেই মালদ্বীপের কুদাহুভাধু আইল্যান্ডের বিভিন্ন নির্মাণাধীন কম্পানিতে কাজ করতেন।গত ১০দিন আগে প্রতিদিনের মতো কর্মস্থলে গিয়ে হঠাৎ মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে জান,অন্য সহকর্মীদের সহায়তায় দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তার অবস্থার অবনতি দেখে রাজধানী মালের ইন্দিরা গান্ধী মেমোরিয়াল হাসপাতালে স্থানান্তর করার কথা জানান।সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চিকিৎসক তার ব্রেইন স্ট্রোকে একপাশ সম্পুর্ন অচল হয়ে যাওয়ার কথা জানান।
বর্তমানে অসুস্থ তৈয়ব উদ্দিনের হাসপাতালে দেখাশুনা ও চিকিৎসার খরচ বহন করছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার মালদ্বীপ প্রবাসী আহমেদ ও রফিকুল ইসলাম।
তারা বলেন,এখানে তৈয়ব উদ্দিনের নিকট আত্মীয় সজন বলতে কেউ নেই।এমতাবস্থায় আমরা তার দেখাশুনা ও চিকিৎসার খরচ বহন করতেছি।কিন্তু বেশিদিন হাসপাতালের খরচ বহন করা আমাদের পক্ষেও অসম্ভব।তবে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দ্রুত দেশে পাঠানোর দরকার।এ জন্য আমরা হাইকমিশনার স্যারকে জানিয়েছি এবং স্যার তৈয়ব উদ্দিনকে দেশে পাঠানোর বেপারে আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন।
বৃহস্পতিবার রাতে অসুস্থ তৈয়ব উদ্দিনকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছেন বাংলাদেশ মিশনের কল্যাণ সহকারী মো. জসিম উদ্দিন।এসময় তিনি তৈয়ব উদ্দিনের শারীরিক অবস্থার খোজ খবর নেন এবং তৈয়ব উদ্দিনের চিকিৎসার বিষয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের সাথে কথা বলেন।
অসুস্থ তৈয়ব উদ্দিনের পরিবার আর্থিকভাবে অসচ্ছল।তিনিই ছিলেন তার পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি।হঠাৎ করে পরিবারের কাণ্ডারির অসুস্থতার কথা শুনে ভবিষ্যতের চিন্তায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন তার স্ত্রী হাফেজা বেগম।
তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে মুঠোফোনে বলেন,আমি কিভাবে তার চিকিৎসা করাবো,আমার ছেলে মেয়েদেরকে কিভাবে খাওয়াবো।আমার স্বামীকে দেশে আনতে এত টাকাও কোথায় পাবো।বাংলাদেশ সরকার এবং প্রবাসীরা যদি সহযোগিতা না করে,তাহলে আমার ভিক্ষা করা ছাড়া উপায় নেই।
একুশে সংবাদ/এ.জে