আগামীকাল নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘গণহত্যা মামলার’ রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে সারাদেশে উদ্বেগ ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “আগামীকাল ফ্যাসিস্ট হাসিনার গণহত্যার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে যে ট্রায়াল হয়েছে তার রায় ঘোষণা হবে। এটি ঘিরে দেশে চরম অনিশ্চয়তা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। একটি মহল আবারও নৈরাজ্য সৃষ্টির চেষ্টা করছে—এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে।”
বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে ‘বিভ্রান্তিকর’ আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের রাজনীতি এখন এক ধরনের কনফিউজ পলিটিক্সে পরিণত হয়েছে। এমন সব ঘটনা ঘটছে যা দেশের মানুষ আগে কখনো কল্পনাও করেনি। এগুলো বাংলাদেশের আত্মা নয়। দেশ আজ এক জটিল সংকটে রয়েছে।”
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের নামে যারা এসেছে, তারা রাজনৈতিক কাঠামোকে একটি নির্দিষ্ট পথে নিতে চাইলেও তা জনগণের প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কিনা—এখনই বলা যাচ্ছে না।”
বিএনপির অবস্থান তুলে ধরে ফখরুল বলেন, “আমরা বারবার বলেছি—গণতন্ত্রে উত্তরণের একমাত্র পথ নির্বাচন। কিছু গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে অনিশ্চয়তা তৈরি করছে, যাতে নির্বাচন ব্যাহত বা বিলম্বিত হয়। কিন্তু দেশের মানুষ এখন একটি নির্বাচিত সরকার চায়, যার পেছনে জনগণের সমর্থন থাকবে।”
তিনি আরও বলেন, “অর্থনীতির অবস্থা ক্রমেই খারাপ হচ্ছে, নির্বাচন ছাড়া তা আরও অবনতির দিকে যাবে। একইভাবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও খারাপ হবে নির্বাচিত সরকার না এলে।”
আগামীকালের রায়কে কেন্দ্র করে দলীয় অবস্থান জানিয়ে তিনি বলেন, “গণহত্যা মামলার রায়কে ঘিরে কিছু মহল আবারও নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চাইছে। আমরা তা হতে দেব না। ছাত্র সমাজের অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে সুযোগ তৈরি হয়েছে—তা যেন নষ্ট না হয়। গণতন্ত্রের উত্তরণের পথ কেউ বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না।”
সকল রাজনৈতিক দলের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আসুন, ঐক্যবদ্ধ হয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য সামনে রেখে এগিয়ে যাই। ভাসানীর আদর্শ ধারণ করে দেশে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করি।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন মওলানা ভাসানী মৃত্যুবার্ষিকী পালন জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। সঞ্চালনা করেন কৃষকদলের সাবেক দপ্তর সম্পাদক এস কে সাদি। অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইস্তিয়াক আজিজ উলফাত, নির্বাহী কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম, ন্যাশনাল লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান প্রমুখ।
একুশে সংবাদ//এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

