AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী
১৪ দলের বৈঠক

শরিক নেতাদের ক্ষোভ, শেখ হাসিনার কণ্ঠে ঐক্যের সুর


Ekushey Sangbad
নিজস্ব প্রতিবেদক
১০:৫৮ এএম, ২৪ মে, ২০২৪
শরিক নেতাদের ক্ষোভ, শেখ হাসিনার কণ্ঠে ঐক্যের সুর

সাড়ে পাঁচ মাস পর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের শরিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন জোট নেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৈঠক শেষে ১৪ দলীয় জোটের নেতারা বলেছেন, এই জোটে নতুন কোনো দলের অন্তর্ভুক্তি মানা হবে না। এছাড়াও জোটনেত্রীর কাছে অবমূল্যায়নের অভিযোগ করেছেন জোটের শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা।

গণভবনে বৈঠকটি শুরু হয় বৃহস্পতিবার (২৩ মে) সন্ধ্যা ৭টায়। শেষ হয় রাত সাড়ে ১০টার পর। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার ওই বৈঠকে জোটনেত্রী শেখ হাসিনাসহ শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা অংশ নেন। বৈঠকের শুরুতেই বক্তব্য দেন শেখ হাসিনা। এরপর একে একে ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) একাংশের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীসহ শরিক দলগুলোর শীর্ষ নেতারা বক্তব্য দেন।

সূচনা বক্তব্যে জোটের প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতির বক্তব্যে ছিল ঐক্যের সুর। দেশ ও জোটের প্রয়োজনে ঐক্য সমুন্নত রাখার পক্ষে নমনীয় বক্তব্য দেন তিনি। এ বিষয়ে জোট শরিকদের কথা শুনবেন, ভবিষ্যতে কী করা যায়, কর্মপন্থা নির্ধারণ করবেন- এমনও ইঙ্গিত দেন।

পরে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে শরিকদের কথা মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং তাদের প্রশ্নের নমনীয় ও ঐক্য ধরে রাখার পক্ষেই জবাব দেন জোটের শীর্ষ নেতা।

বৈঠকে শেখ হাসিনার পর ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, গত সংসদ নির্বাচনের সময় জোট থেকে আমাদের প্রার্থী করা হয়। সেখানে আবারও আওয়ামী লীগের নেতা আমার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেলেন। আমি আপনার (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে সাক্ষাৎ করতে পারলাম না। নির্বাচন হয়ে গেল, এরপরও দেখা করবো, তা-ও হলো না। এখন আমার প্রশ্ন, জোটের প্রাসঙ্গিকতা আছে কি না? জোটের গতিবিধি কোন পথে? আপনি যেভাবে বলবেন, সেভাবেই হবে। আপনার মুখ থেকে আমরা শুনতে চাই।

শেখ হাসিনা বলেন, জোটের প্রাসঙ্গিকতা আছে বলেই আপনাদের ডেকেছি। জোট থাকবে না কেন? জোট আছে, ছিল, থাকবে।

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) একাংশের সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, জোটের প্রার্থী করে লাভ কী হলো? সেখানে আওয়ামী লীগ নেতা প্রার্থী হয়ে গেলেন। আমাকে নৌকার লোকের বিরুদ্ধে ভোট করতে হলো। আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতারা বললেন, জোট নেই। এখনো আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল নেতা-মন্ত্রী-এমপিরা যখন বলেন, জোট নেই, তখন তো প্রশ্ন থেকেই যায়, জোটের গতি কোনো পথে? প্রাসঙ্গিকতা আছে কি? 

শেখ হাসিনা বলেন, আমি তো আগেই বলেছি, জোট আছে, থাকবে। নির্বাচন নিয়ে তো নানামুখী ষড়যন্ত্র ছিল। নির্বাচন বানচাল করার বড় চক্রান্ত ছিল। শুধু কি তা-ই? নির্বাচন ঠেকানোই নয়, আমার বিরুদ্ধেও ষড়যন্ত্র ছিল। আমাকে মেরে ফেলার চক্রান্ত ছিল। আমি এসব পরোয়া করি না। তিনি বলেন, আমি দেশের জনগণের জন্য কাজ করে যাবো। জোটের কার্যকারিতা আছে। আপনারাই ছিলেন, আপনারাই থাকবেন। একসঙ্গেই আমরা থাকবো।

সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রীরা বলেন, বামদলের ভোট নেই। আমাদের নিজস্ব কোনো ভোট নেই। আমাদের যদি ভোট না থাকে, তাহলে কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিমের কী ভোট আছে? তিনি কীভাবে কক্সবাজার থেকে এমপি হয়ে আসেন? তার কত ভোট? আমাদের বলেন, শক্তি বাড়াতে। কীভাবে শক্তি বাড়াবো?

দিলীপ বড়ুয়ার বক্তব্যের তেমন জবাব দেননি জোটনেত্রী। তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, নির্বাচনের আগে অনেক কিংস পাটি তৈরি হয়েছিল। আমার নির্বাচনী এলাকায় এক কিংস পার্টির নেতাকে বিজয়ী করে আনতে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা কলকাঠি নাড়লেন। অথচ আমি জামায়াতের বিরুদ্ধে মামলা করেছি, আরও অনেক হিডেন কাজ করেছি, যার বেনিফিশিয়ারি আওয়ামী লীগ। সেখানে আমাকেই বাদ দেওয়া হয়েছে। আমিও নির্বাচনের আগে কোনো কথা বলিনি। কারণ আমি চাই জোটের ঐক্য থাকুক। কিন্তু কিছু নেতা তো চান না ১৪ দলীয় জোট থাকুক।

রাশেদ খান মেনন বলেন, সংসদ নির্বাচনের সময় জোট থেকে আমাদের প্রার্থী করা হয়। সেখানে আবারও আওয়ামী লীগের নেতা আমার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেলেন। আমি আপনার (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে সাক্ষাৎ করতে পারলাম না। নির্বাচন হয়ে গেল, এরপরও দেখা করবো, তা-ও হলো না।

মাইজভান্ডারীর বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাসতে হাসতে বলেন, কিংস পার্টির কথা বলছেন, আপনার আসনে তো আপনার ভাতিজা প্রার্থী হয়েছিল। পরিবার ঠিক রাখতে পারেন না, এটাও কি আমাদের দোষ?

বৈঠক প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রাশেদ খান মেনন বলেন, ১৪ দল সংগ্রাম ও নির্বাচনে একসঙ্গে ছিল। রাজনৈতিকভাবে সরকারের বিরুদ্ধে যখন আক্রমণ বা আমেরিকার ভূমিকা ছিল, তখন আমরা পাশাপাশি ছিলাম। অতীতেও একসঙ্গে ছিলাম। একটা সামরিক-বেসামরিক গোষ্ঠী অর্থনৈতিক খাতে নৈরাজ্য ও লুটতরাজ করছে। এগুলো বন্ধে বক্তব্য তুলে ধরেছি।

হাসানুল হক ইনু বলেন, দীর্ঘ দিন পর বৈঠক হলো। অনেক দূরত্ব ছিল। এসব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সমসাময়িক রাজনীতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। লুটপাট, দুর্নীতি, সুশাসনে ঘাটতি এবং সরকার উৎখাতের বিষয়ে ষড়যন্ত্র নিয়েও কথা হয়েছে। দেশি-বিদেশি চক্রান্ত মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে বলা হয়েছে। মনোমালিন্য ত্রুটি-বিচ্যুতি সমাধান করা দরকার। তবে মন্ত্রিপরিষদ নিয়ে আলোচনা হয়নি।

নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী বলেন, কিংস পার্টি নিয়ে আমরা কথা বলেছি। জামায়াতের নিবন্ধন বাতিলে মামলার বেনিফিশিয়ারি সরকার। অনেক অর্জন সরকারের হয়েছে। সরকার সব ভুলে গেছে। এগুলো হতে পারে না। বড় দলকে সম্মান করি। ছোটদের কেয়ারে রাখতে হবে। ১৪ দলের বিকল্প কিছু তৈরি করছে না সরকার। আমাদের কী ভোট আছে, কী নেই সেটা দেখে দলে নেয় নাই। ১৪ দলে আর নতুন কোনো দল নেওয়া হবে না। এ বিষয়ে আমরা একমত। আর কারও অন্তর্ভুক্তি গ্রহণ করবো না আমরা।’

জাসদ একাংশের সাধারণ সম্পাদক শিরিন আক্তার বলেন, দীর্ঘদিন পর জোটের মিটিং হয়েছে। সব বিষয়েই কথা হয়েছে। জোট নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেন, যেগুলো বলা উচিত নয়। বৈঠকে জোটের স্বার্থে এগুলো নিয়ে সবাই কথা বলেছেন।

এদিকে বৈঠকে সূচনা বক্তব্যে ১৪ দল নেতাদের শেখ হাসিনা বলেন, আপনারা এসেছেন, ভালো হয়েছে। আমি খুশি হয়েছি। সবার কথা শুনবো। কীভাবে কি করা যায়। তিনি বলেন, স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তিকে আরও সুসংগঠিত হয়ে মানুষের কাছে যেতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি ছাড়া দেশের মানুষের কল্যাণ হবে না।

 

একুশে সংবাদ/সা.আ

Link copied!