বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে এমন কিছু নাম রয়েছে, যাদের কলমে শব্দ হয়ে ওঠে অনুভূতির ভাষা। তাদের মধ্যে অন্যতম হুমায়ূন আহমেদ। আজ (১৩ নভেম্বর) এই সাহিত্য জাদুকরের ৭৭তম জন্মদিন। কেন্দুয়ায় নানা আয়োজনের মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যের বরপুত্র হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন পালিত হয়েছে।
১৯৪৮ সালের এই দিনে নেত্রকোণার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। পিতা শহিদ মুক্তিযোদ্ধা ফয়জুর রহমান আহমদ এবং মা আয়েশা ফয়েজ ছিলেন সাহিত্যপ্রেমী ও সংবেদনশীল নারী। এমন পারিবারিক পরিবেশেই গড়ে ওঠে বাংলাদেশের অন্যতম জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়নে অধ্যয়ন শেষে তিনি শিক্ষকতা শুরু করেন। পরে যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ডাকোটা স্টেট ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তবে তার প্রকৃত সত্তা ছিল সাহিত্যিক ও গল্পকার হিসেবে।
১৯৭২ সালে প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস নন্দিত নরকে দিয়েই তিনি পাঠকের হৃদয়ে জায়গা করে নেন। এরপর শঙ্খনীল কারাগার, এইসব দিনরাত্রী, দারুচিনি দ্বীপ, জোছনা ও জননীর গল্প, বাদশাহ নামদার সহ অসংখ্য জনপ্রিয় উপন্যাস রচনা করে তিনি বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্ধ করেছেন।
তার সৃষ্টি করা মিসির আলি, হিমু, বাকের ভাই, রুপা, শুভ্র ও তিথির মতো চরিত্র আজও পাঠকের মনে অম্লান। সাহিত্য ছাড়াও টেলিভিশন নাটক ও চলচ্চিত্রে তিনি ছিলেন এক অগ্রদূত। এইসব দিনরাত্রী, বহুব্রীহি, কোথাও কেউ নেইসহ অসংখ্য নাটক এবং আগুনের পরশমণি, শ্রাবণ মেঘের দিন, ঘেটুপুত্র কমলাসহ একাধিক চলচ্চিত্র তাকে দিয়েছে অনন্য উচ্চতা।
২০১২ সালের ১৯ জুলাই নিউইয়র্কে মৃত্যুবরণ করলেও তার লেখা, চরিত্র ও সিনেমার মাধ্যমে আজও বেঁচে আছেন হুমায়ূন আহমেদ। পাঠকের ভালোবাসায় তিনি অমর হয়ে আছেন বাংলা সাহিত্যের চিরন্তন নক্ষত্র হিসেবে।
ড. হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিন উপলক্ষে তার প্রতিষ্ঠিত নিজ গ্রাম কুতুবপুরে শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠে দিনব্যাপী আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে পবিত্র কোরআন খতম, আনন্দ র্যালি, প্রকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, জন্মদিনের কেক কাটা ও বিতরণ, বৃক্ষরোপণ, কুইজ প্রতিযোগিতা, স্যারের নির্মিত নাটক ও সিনেমার অংশ বিশেষ অভিনয় এবং পুরস্কার বিতরণ ও সমাপনী বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমদাদুল হক তালুকদার, বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, অভিভাবকবৃন্দ, বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
একুশে সংবাদ//এ.জে



একুশে সংবাদের সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

