AB Bank
  • ঢাকা
  • রবিবার, ০২ নভেম্বর, ২০২৫, ১৬ কার্তিক ১৪৩২

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

জলবায়ু লড়াইয়ের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে কপ-৩০


Ekushey Sangbad
Mohammed Mofe, Reporter Ekushey Sangbad
০৮:১০ পিএম, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

জলবায়ু লড়াইয়ের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে কপ-৩০

জাতিসংঘের কপ৩০ সম্মেলনের ব্রাজিলীয় সভাপতি বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, তিনি চান এবারের সম্মেলন বৈশ্বিক জলবায়ু অগ্রগতির নতুন যুগের সূচনা করুক। পাশাপাশি তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, দেশগুলো আরও উচ্চাকাঙ্ক্ষী কার্বন নির্গমন হ্রাস পরিকল্পনা উপস্থাপন করবে।

প্যারিস থেকে এএফপি জানায়, আমাজনের শহর বেলেমে অনুষ্ঠেয় কপ৩০ সম্মেলন প্যারিস চুক্তির এক দশক পূর্তির সূচনাবিন্দু হলেও এটির পটভূমিতে রয়েছে জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয়বারের মতো প্রত্যাহার এবং বৈশ্বিকভাবে জলবায়ু ও অন্যান্য যৌথ সংকট মোকাবিলায় মন্থর অগ্রগতির মতো বিষয়।

নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় কপ৩০ সম্মেলনের সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত বর্ষীয়ান জলবায়ু কূটনীতিক আন্দ্রে কোরেয়া দো লাগো স্বীকার করেছেন, বিশ্ব আজ ‘অসাধারণ’ সব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। ভূরাজনৈতিক টানাপোড়েন এবং রেকর্ড উচ্চ তাপমাত্রার মতো বৈজ্ঞানিক তথ্য সেই সংকটের প্রমাণ।

কপ৩০-এ অংশ নিতে যাওয়া প্রায় ২০০টি দেশের কাছে তার দ্বিতীয় চিঠিতে দো লাগো ‍‍`জলবায়ু জরুরি পরিস্থিতির’ মুখে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে সম্মিলিতভাবে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, এই সম্মেলন হতে পারে আমাদের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ বাঁকবদলের মুহূর্ত—যা বিদ্যমান ফাঁক পূরণ করে আমাদের নিয়ে যাবে একটি টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমৃদ্ধির নতুন যুগে।

জলবায়ু প্রতিশ্রুতির অগ্রগতি

বড় বড় অর্থনীতিগুলো এখনও তাদের পরিবর্ধিত জলবায়ু পরিকল্পনা (জাতীয়ভাবে নির্ধারিত অবদান বা এনডিসি) চূড়ান্ত করছে। এগুলো ২০২৫ সালের শুরুতেই দেওয়ার কথা থাকলেও এখন আশা করা হচ্ছে কপ৩০ সম্মেলনের আগেই এসব জাতিসংঘে জমা পড়বে।

প্রতিটি দেশকে প্রতি পাঁচ বছর অন্তর তাদের এনডিসি হালনাগাদ করতে হয়। কিন্তু ২০৩৫ সালের লক্ষ্যমাত্রা এখনো অনেক দেশ নির্ধারণ করেনি। এর মধ্যে রয়েছে বৃহৎ কার্বন নিঃসরণকারী চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন।

‍‍`সবাই যেন খুবই আগ্রহ নিয়ে তাদের এনডিসি চূড়ান্ত করছে এবং আমি বিশ্বাস করি, সেপ্টেম্বরের মধ্যেই উল্লেখযোগ্যসংখ্যক দেশ তা উপস্থাপন করবে,‍‍` কোপেনহেগেনে এক প্রস্তুতি সম্মেলনের ফাঁকে সাংবাদিকদের বলেন দো লাগো।

তিনি জানান, বৈঠকে ‘ইতিবাচক’ পরিবেশ বিরাজ করছে।

কপ৩০-এর প্রধান নির্বাহী আনা তোনি জানান, দেশগুলোর প্রতিশ্রুতিগুলোর গুণগত মান ‘পরিবর্তন’ হয়েছে এবং এখন অর্থনীতির আরও বেশি খাত এতে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্র জলবায়ু সহযোগিতা থেকে ট্রাম্প প্রশাসনের দ্বিতীয়বারের মতো সরে যাওয়ার পর নজর এখন অন্যান্য বড় নিঃসরণকারী দেশগুলোর দিকে।

গত মাসে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জানান, তার দেশ জলবায়ু প্রচেষ্টা শিথিল করবে না এবং কপ৩০ সম্মেলনের আগেই ২০৩৫ সালের প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করবে।

তার কথায়, এই পরিকল্পনায় এবার প্রথমবারের মতো কেবল কার্বন ডাইুঅক্সাইড নয়, বরং সব ধরনের গ্রিনহাউস গ্যাস এবং অর্থনীতির সব খাতই অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

ইউরোপীয় কমিশন প্রস্তাব দিয়েছে ২০৪০ সালের মধ্যে ১৯৯০ সালের তুলনায় নিঃসরণ ৯০ শতাংশ কমানো হবে। তবে কিছু সদস্য দেশ এ লক্ষ্যকে অতিরিক্ত উচ্চ বলে মনে করছে, যা পরিকল্পনার অনুমোদন বিলম্বিত করছে।

চিঠিতে দো লাগো সতর্ক করেছেন, ‍‍`নতুন সংকটের মুখে আমরা যেন পুরোনো কৌশল দিয়ে সাড়া না দিই‍‍`, কারণ বিজ্ঞানের অগ্রগতি, প্রযুক্তির পরিবর্তন ও সমাজের রূপান্তরকে উপেক্ষা করা ঠিক হবে না।

তিনি আরও বলেন, কপ৩০ যেন শুধু আলোচনার জায়গায় সীমাবদ্ধ না থেকে জলবায়ু কর্মের পরিধিকে আরও বিস্তৃত করে এবং মানবজাতির সঙ্গে পৃথিবীর সম্পর্কের গতিপথ বদলে দেয়—এটাই তার লক্ষ্য।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বর্তমান বৈশ্বিক ভূরাজনৈতিক উত্তেজনা—বিশেষত ইউক্রেন যুদ্ধ, মধ্যপ্রাচ্য সংকট ও যুক্তরাষ্ট্র-চীন প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রেক্ষাপটে—জলবায়ু বিষয়ে একতাবদ্ধ আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ আরও কঠিন হয়ে উঠেছে। তা সত্ত্বেও কপ৩০ আয়োজক ব্রাজিল চাইছে, জলবায়ু ইস্যু যেন ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শ ও স্বার্থের ঊর্ধ্বে গিয়ে এক যৌথ মানবিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত হয়।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, কপ৩০-এর আয়োজক দেশ হিসেবে ব্রাজিলের অবস্থান জলবায়ু আলোচনায় দক্ষিণ গোলার্ধের দেশগুলোর নেতৃত্বকে দৃঢ়তা দিয়েছে।

বেলেম শহরটি নিজেই আমাজন বনের প্রবেশদ্বার হওয়ায়, প্রাকৃতিক সংরক্ষণ ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষার বিষয়টিও এ সম্মেলনে গুরুত্ব পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

 

কপ৩০ সম্মেলনে এ বিষয়ে নির্দিষ্ট ও বাধ্যতামূলক প্রতিশ্রুতি আদায়ের চেষ্টা থাকবে বলে কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে।

নবায়নযোগ্য জ্বালানি, সবুজ প্রযুক্তি এবং জলবায়ু সহনশীল অবকাঠামো—এই তিনটি বিষয় কপ৩০ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। জলবায়ু সমস্যা সমাধানে কেবল প্রতিশ্রুতি নয়, বাস্তবসম্মত প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের পথনকশাও তুলে ধরতে চান আয়োজকরা।

Link copied!