ভোটার তালিকা হালনাগাদে বড় পরিবর্তন আনল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এখন থেকে নির্বাচন কমিশন চাইলে তফসিল ঘোষণার আগে বছরের যেকোনো সময় ভোটার তালিকা সংশোধন ও প্রকাশ করতে পারবে।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাতে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদবিষয়ক বিভাগ থেকে ‘ভোটার তালিকা (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫’ নামে একটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে।
অধ্যাদেশে বলা হয়, ভোটার তালিকা আইন, ২০০৯ (৬ নম্বর আইন) সংশোধন করে নতুন ধারা ও উপধারা সংযোজন করা হয়েছে। এর মধ্যে ধারা ৩-এর দফা (জ)-এ "১ জানুয়ারি"র পর যুক্ত করা হয়েছে—"কমিশন কর্তৃক ঘোষিত অন্য কোনো তারিখ"। অর্থাৎ, এখন কমিশন চাইলে যেকোনো সময় ভোটার তালিকা হালনাগাদের সিদ্ধান্ত নিতে পারবে।
প্রতিবছর ২ জানুয়ারি থেকে ২ মার্চ পর্যন্ত অথবা তফসিল ঘোষণার পূর্বে যেকোনো সময় কমিশন ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা যাবে।
হালনাগাদের আওতায় থাকবে:
- (ক) ১৮ বছর পূর্ণ করা নতুন নাগরিকদের তালিকাভুক্তি
- (খ) মৃত বা অযোগ্য ব্যক্তিদের নাম কর্তন
- (গ) স্থানান্তরিত ভোটারদের নতুন এলাকায় অন্তর্ভুক্তি
এছাড়াও অধ্যাদেশে স্পষ্ট করা হয়েছে, নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে হালনাগাদ না হলেও ভোটার তালিকার বৈধতা বা ধারাবাহিকতা নষ্ট হবে না।
অধ্যাদেশে বলা হয়, সংসদ ভেঙে যাওয়ার পরবর্তী পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতির কাছে এ বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন দেখা দেওয়ায় সংবিধানের ৯৩(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী এই অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে।
পূর্ববর্তী আইনে (ভোটার তালিকা আইন, ২০০৯) বলা হয়েছিল, ভোটার তালিকার জন্য ‘যোগ্যতা অর্জনের তারিখ’ শুধুমাত্র ১ জানুয়ারি। ফলে যারা বছরের অন্যান্য সময়ে ১৮ বছর পূর্ণ করতেন, তারা সেই বছর ভোটার হতে পারতেন না।
তবে নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, বছরজুড়েই নতুন ভোটার তালিকাভুক্তির সুযোগ থাকছে, যা নির্বাচনের অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সময়োপযোগী ব্যবস্থাপনার দিকেই ইঙ্গিত করছে।
নির্বাচনের প্রাক্কালে এমন উদ্যোগে নির্বাচন কমিশনের ওপর তথ্য হালনাগাদের দায়িত্ব যেমন বাড়বে, তেমনি ভোটারদের অংশগ্রহণও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
একুশে সংবাদ//র.ন