উত্তরায় বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় দগ্ধদের চিকিৎসা নিয়ে গুজবে কান না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, বর্তমানে কোনো রক্ত বা স্কিন ডোনেশনের প্রয়োজন নেই।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাত ৮টার দিকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমাদের এখানে রক্ত ও স্কিনের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। তাই সাধারণ মানুষকে ডোনেশনের জন্য উদ্বিগ্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই। একইসঙ্গে নগদ অর্থ সহায়তা পাঠানোরও এখন প্রয়োজন নেই। সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত সহায়তা মিলছে।”
তিনি জানান, বর্তমানে বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি রয়েছেন বিমান দুর্ঘটনায় দগ্ধ ৪২ জন রোগী। এদের মধ্যে ৮ জন আইসিইউতে চিকিৎসাধীন এবং তাদের মধ্যে ছয়জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তবে ইতিবাচক খবর হলো, দুইজন রোগীর উন্নতি হওয়ায় তাদের ইন্টারমিডিয়েট কেয়ারে স্থানান্তরের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া ১৩ জনকে কেবিনে স্থানান্তর করা হয়েছে।
চিকিৎসা সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতার কথাও তুলে ধরেন অধ্যাপক নাসির উদ্দিন। তিনি বলেন, “সিঙ্গাপুর ও ভারতের চিকিৎসকরা আমাদের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করেছেন। চীনের চিকিৎসকদের সঙ্গেও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কথা হয়েছে। অচিরেই তারা আমাদের চিকিৎসা কার্যক্রমে অংশ নেবেন।”
তিনি আরও বলেন, “বিশ্বের যেকোনো দেশ যদি চিকিৎসা সহায়তায় আগ্রহী হয়, আমরা তাদের আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাবো। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা দগ্ধদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা নিশ্চিত করতে চাই।”
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এখন পর্যন্ত দুর্ঘটনায় দগ্ধ ১৩ জন রোগী মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের চিকিৎসা ও অবস্থার নিয়মিত মূল্যায়নের জন্য ১২ ঘণ্টা পরপর সিনিয়র চিকিৎসকদের সমন্বয়ে মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, “রোগীদের অবস্থা ঘণ্টায় ঘণ্টায় পরিবর্তিত হচ্ছে। আমরা সর্বোচ্চ আন্তরিকতা এবং দক্ষতা দিয়ে চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছি।”
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে প্রতিনিয়ত রোগীদের সার্বিক চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হচ্ছে বলেও জানান ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক।
শেষে অধ্যাপক নাসির উদ্দিন গণমাধ্যম ও সাধারণ মানুষকে গুজব না ছড়ানোর অনুরোধ জানান এবং বলেন, “সবাই সহযোগিতা করুন, তবে দায়িত্বশীলভাবে। যেকোনো তথ্য জানার জন্য বার্ন ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকে নিয়মিত আপডেট দেওয়া হবে।”
একুশে সংবাদ//র.ন