গোপালগঞ্জে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীকে গুলি চালাতে হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। একইসঙ্গে জানিয়েছেন, সংঘর্ষের পর জারিকৃত ১৪৪ ধারা পর্যায়ক্রমে তুলে নেওয়া হবে।
রোববার (২০ জুলাই) সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক কোর কমিটি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য দেন তিনি।
গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনীর গুলির বিষয়ে জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, "সেই সময়ের পরিস্থিতির প্রয়োজনেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।"
উল্লেখ্য, গত বুধবার গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশকে কেন্দ্র করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ চলাকালে সেনাবাহিনী ও পুলিশকে গুলি ছোড়তে দেখা যায়। পরবর্তীতে কারফিউ জারি করা হলেও বর্তমানে কারফিউ তুলে ১৪৪ ধারা বহাল রয়েছে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, ধাপে ধাপে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হবে। যারা অপরাধ করেছে, তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। তবে নির্দোষ কেউ যেন হয়রানির শিকার না হয়, সে বিষয়েও সতর্ক থাকবে সরকার।
তিনি বলেন, "গোপালগঞ্জের ঘটনা অস্বীকার করছি না। রাজনীতিতে এমন ঘটনা ঘটে থাকে। তবে ঘটনার পর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে কি না, সেটিই গুরুত্বপূর্ণ।"
গোপালগঞ্জের ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি—এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উপদেষ্টা জানান, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী পুলিশ ব্যবস্থা নেবে। তিনি আরও বলেন, সেখানে গণগ্রেপ্তার হচ্ছে না, শুধু অভিযুক্তদের ধরা হচ্ছে।
এক সাংবাদিক জানালে, গোপালগঞ্জে নয়জন শিশুকে আটকে রাখা হয়েছে—এ বিষয়ে তার কাছে কোনো তথ্য নেই বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। এরপর তিনি জানতে চান কোন গণমাধ্যমে এমন খবর প্রকাশ হয়েছে। সাংবাদিকরা জানান, দৈনিক সমকালে এ নিয়ে প্রতিবেদন ছাপা হয়েছে।
ছাত্রলীগের হরতাল নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি হরতাল ডেকেছিল, সেখানে দুইটি গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। অতীতে হরতালে নাশকতা আরও বড় পরিসরে হতো, এবার তা কমাতে পেরেছি।
আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে কি না—এমন প্রশ্নের উত্তরে উপদেষ্টা বলেন, "আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রস্তুত রয়েছে। প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে। সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে কোনো সমস্যা হবে না।"
তিনি আরও বলেন, "আজকের বৈঠকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছ থেকে বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছি। তারা জানালেন, আগে যে অবস্থা ছিল, এখন অনেক উন্নতি হয়েছে। এই উন্নতির বিষয়ে জনগণও মূল্যায়ন করবে।"
একুশে সংবাদ/জা.নি/এ.জে