চাল সংগ্রহের মৌসুমেও খুচরা বাজারে মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি, সবজির কয়েকটি পণ্যের দাম বেড়েছে এক সপ্তাহের ব্যবধানে। তবে মুরগির বাজারে কিছুটা স্বস্তি দেখা যাচ্ছে।
শুক্রবার (২৭ জুন) রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউনহল, নয়াবাজার ও কেরানীগঞ্জের আগানগর বাজার ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
বোরো মৌসুমে ধান সংগ্রহ শেষে চাল বাজারে প্রবেশ করেছে। কিন্তু গত তিন সপ্তাহ ধরে চালের দাম ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। খুচরা বাজারে মোটা চালের কেজিপ্রতি দাম বেড়েছে ২-৩ টাকা এবং সরু চালের ক্ষেত্রে ৭-৮ টাকা পর্যন্ত। ব্যবসায়ীদের দাবি, ঈদের পর প্রতিটি বস্তায় ৪০০ টাকা পর্যন্ত মূল্যবৃদ্ধি হওয়ায় তারাই বাধ্য হচ্ছেন বেশি দামে বিক্রি করতে।
চাল ব্যবসায়ী রাকিব বলেন, “সরবরাহ বা চাহিদা বাড়েনি, পরিবহন ব্যয়ও অপরিবর্তিত। তবুও হঠাৎ করে দাম বেড়েছে।”
ব্যবসায়ী ইসমাইল জানান, এখন মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৮০-৮২ টাকা, নাজিরশাইল ৭৬-৮৬ টাকা, আটাইশ ৫৮-৬০ টাকা এবং পোলাও চাল ১১৬-১১৮ টাকা প্রতি কেজিতে।
ভোক্তারা বলছেন, বাজারে নজরদারির ঘাটতির কারণেই এই অস্থিতিশীলতা। একজন ক্রেতা মন্তব্য করেন, “চাল আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্য। নিয়মিত বাজার তদারকি না থাকায় অসাধু ব্যবসায়ীরা সুযোগ নিচ্ছেন।”
অন্যদিকে, কয়েক ধরনের সবজির দামেও ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা গেছে। বর্ষা শুরুর ফলে বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে বলে দাবি করেন বিক্রেতারা। আগানগর বাজারের বিক্রেতা উজ্জ্বল জানান, “কয়েকটি এলাকায় বৃষ্টিতে ক্ষেত নষ্ট হওয়ায় সরবরাহ কমেছে। এর প্রভাব পড়েছে দামে।”
বাজারে প্রতি কেজি টমেটো ১০০-১২০ টাকা, বরবটি ৬০-৮০ টাকা, করলা ৮০, পেঁপে ৪০, ঢ্যাঁড়স ৪০-৫০, পটোল ৪০-৫০, ধুন্দল ৪০, আলু ২৫ এবং বেগুন ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা এবং ধনেপাতা ৪০০ টাকা প্রতি কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, যেখানে সপ্তাহখানেক আগে ধনেপাতা ছিল ২৫০ টাকা।
তবে ব্রয়লার মুরগির দামে কিছুটা স্বস্তি দেখা গেছে। এখন প্রতিকেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়, সোনালি মুরগি ২৮০-৩০০, লেয়ার মুরগি ৩০০ এবং দেশি মুরগি ৬০০-৬৫০ টাকায়।
মাংসের দামে খুব একটা পরিবর্তন নেই। গরুর মাংস ৭৮০ টাকা, খাসির মাংস ১২০০ এবং ছাগলের মাংস ১১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজিতে।
পেঁয়াজের দাম স্থিতিশীল থাকলেও আদা ও রসুনের বাজারে কিছুটা ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। দেশি আদা বর্তমানে ১২০-১৮০ টাকা ও দেশি রসুন ১১০-১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যেখানে এক সপ্তাহ আগে আদা ছিল ৯০-১৭০ ও রসুন ৯০-১৪০ টাকা।
বিক্রেতাদের মতে, সরবরাহ কমে যাওয়া এবং চাহিদা বৃদ্ধিই মূলত এই দামের পেছনে কারণ। তবে পেঁয়াজে মজুত ও সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় সেখানকার দাম তুলনামূলকভাবে স্থির রয়েছে।
একুশে সংবাদ/স.ট/এ.জে