অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করবেন না বলে জানিয়েছেন তার বিশেষ সহকারী প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদ ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব। শুক্রবার (২৩ মে) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এই ঘোষণা দেন।
ফয়েজ তৈয়্যব লেখেন, “অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের ক্ষমতা প্রয়োজন নেই, কিন্তু বাংলাদেশের জন্য, শান্তিপূর্ণ ডেমোক্রেটিক ট্রাঞ্জিশনের জন্য ড. ইউনূস স্যারের দরকার আছে। বরং ক্যাবিনেটকে আরও গতিশীল হতে হবে, সরকারকে আরও বেশি ফাংশনাল হতে হবে, উপদেষ্টাদের আরও বেশি কাজ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে ড. ইউনূসের যেই মর্যাদা ও আস্থা আছে, তা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। সেনাবাহিনীকে সম্মান ও আস্থায় রাখতে হবে, তবে রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ গ্রহণযোগ্য নয়। একইভাবে, ইনক্লুসিভনেসের নামে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন কাম্য নয়।”
নির্বাচন প্রসঙ্গে ব্যক্তিগত অভিমত তুলে ধরে তৈয়্যব জানান, “দরকারি প্রস্তুতি শেষে আগামী এপ্রিল-মে মাসে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলেই আশা করছি। তবে নির্বাচনের নির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণার এখতিয়ার কেবল স্যারের—এই এখতিয়ার হাইজ্যাক করার সুযোগ কারও নেই।”
তিনি বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে জুলাই-আগস্টে জাতীয় উদযাপন হবে। একইসঙ্গে আগস্টের মধ্যেই ‘স্বৈরাচারী হাসিনার’ বিরুদ্ধে প্রথম বিচারিক রায় ঘোষণা হবে বলে আশা করি।”
সেনাপ্রধানের বক্তব্য নিয়েও প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার এই ঘনিষ্ঠ সহযোগী। তিনি লিখেছেন, “ডিসেম্বরে নির্বাচনের বিষয়ে সেনাপ্রধানের বক্তব্য জুরিশডিকশনাল কারেক্টনেস রক্ষা করেনি। সেনাবাহিনীর বক্তব্য সংযত হওয়া দরকার ছিল।”
সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে নেতৃত্ব দেওয়া নিয়ে ড. ইউনূসকে ঘিরে বিভিন্ন মহলে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অনলাইনে একটি ভুয়া প্রেস বিজ্ঞপ্তি ছড়ানো, সেনাবাহিনীর বিবৃতি ও রাজনৈতিক দলগুলোর অবস্থান মিলিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই প্রেক্ষাপটে প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। তৈয়্যবের এই পোস্ট সেই গুঞ্জনের নিরসন ঘটিয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
বিশেষ সহকারীর এই ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে পরিষ্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে, ড. ইউনূস নিজ অবস্থানে দৃঢ় রয়েছেন এবং সরকারকে আরও কার্যকরভাবে পরিচালনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নির্বাচন, সেনাবাহিনীর ভূমিকা ও আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ অংশগ্রহণ ইস্যুতেও তার দপ্তরের অবস্থান স্পষ্ট।
একুশে সংবাদ/আ.ট/এ.জে